বর্ধমান পূর্ব থেকে হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। কিন্তু কেন তাঁকেই বর্ধমান পূর্বের জন্য বেছে নিল বিজেপি? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, একেবারে হিসেব কষে মাঠে নেমেছে বিজেপি। সেই হিসেবগুলি ঠিক কী কী?
কিছুদিন আগেই সিএএ লাগু হয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে সিএএ নিয়ে মতুয়াদের মধ্য়ে উৎসাহ কিছুটা হলেও কমেছে। সেক্ষেত্রে মতুয়া ভোটব্য়াঙ্ককে অটুট রাখা, নিজেদের দিকে রাখাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কার্যত অসীম সরকারকে প্রার্থী করে সেই হিসাবটা মাথায় রেখেছে বিজেপি।
প্রথমত যেটা দেখা যাচ্ছে যে বর্ধমান পূর্বে অন্তত ২০ শতাংশের বেশি মতুয়া ভোট রয়েছে। প্রার্থী নিজেও একজন মতুয়া।
এদিকে কালনা বিধানসভা এলাকায় তাঁর পরিচিতি যথেষ্ট রয়েছে। অতীতে পাগলা ভবা আশ্রমে তাঁর যাতায়াত ছিল।
এদিকে তিনি মেমারি বিধানসভা এলাকায় কবি গানের মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়।
কার্যত অনেক হিসেব কষে তাঁকে এই জায়গায় দাঁড় করানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, অসীম সরকার মতুয়াদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। মেমারি বিধানসভা এলাকার পারিজাত নগর, মহেশডাঙা ক্যাম্প, পাল্লা ক্যাম্প, উদয়পল্লি, কালনার দিকে বেশ নামডাক রয়েছে।
মূলত একেবারে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত ভালোভাবে মিশে যেতে পারেন তিনি। সেই সঙ্গে গানে গানে প্রচারও চলছে ভালোভাবেই। গানে গানেই তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন তিনি। সব মিলিয়ে একটি স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে বিজেপির কবিয়াল প্রার্থীর মধ্য়ে।
এদিকে প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা করার পরে অসীম সরকার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন,আমি কী করেছি জানি না। মন প্রাণ দিয়ে লড়াইটা করেছি। আমি কোনওদিন ভাবতে পারিনি। আমি কখনও এটা ভাবতে পারিনি। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করি যে দায়ভার আমার উপর অর্পন করেছে তার শক্তি যেন তিনি দেন।
তিনি বলেন, বর্ধমান পূর্বের কর্মকর্তা যারা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলছি। জাতিধর্ম নির্বিশেষে বোঝেন যে অসীম সরকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়়িত নন। আমি জনতা জনার্দনের চাকর হয়ে সেবা করার জন্য তৈরি, সেটাই আমি করি। এরপরই আবেগে চোখে জল অসীম সরকারের। তিনি বলেন, তৃণমূলের লোকজন আমায় ফোন করেছেন। তাঁরা বলেন আর পারছি না। এমন একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দল তৃণমূল। আমাদের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অশেষ ধন্য়বাদ। তাঁরা আমাকে এত বড় সম্মান জানিয়েছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত কবিয়াল কতটা সাড়া ফেলতে পারবেন সেটাও দেখার।