লোকসভা নির্বাচনের জন্য অসমের ১৪টি লোকসভা আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। কিন্তু তাতে ছত্রে-ছত্রে ভুল ছিল। এখন যে আসনের কোনও অস্তিত্ব নেই, সেই আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত নয় এমন আসনকে সংরক্ষিত বলে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছিল বিজেপির প্রার্থীতালিকায়। যে আসন আবার তফসিলি জাতিদের সংরক্ষিত, সেটিকে সাধারণ আসনের তকমা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে তুমুল অসন্তোষের মুখে পড়ে কেন্দ্রের শাসক দল। বিশেষত অসমে বিজেপিই ক্ষমতায় আছে আর বিজেপিই সেই রাজ্যের লোকসভা কেন্দ্রের নামের ক্ষেত্রে এরকম ভুল করায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সেই বিতর্কের মুখে পড়ে অসমের প্রার্থীতালিকার একগুচ্ছ ভুল সংশোধন করে নিয়েছে বিজেপি। রবিবার নতুন করে উত্তর-পূর্ব রাজ্যের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে সঠিক নাম দেওয়া আছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রাথমিকভাবে বিজেপির তরফে যে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ২০১৯ সালের লোকসভা আসনের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। তারপর অসমে যে আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছে এবং একাধিক রদবদল হয়েছে, সেটা থেকে নজর এড়িয়ে গিয়েছিল বিজেপির। আর সেই কারণেই এরকম ভুল হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কীরকম ভুল ছিল?
শনিবার বিজেপির প্রাথমিক প্রার্থীতালিকায় করিমগঞ্জ আসনকে ‘তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের ১১ অগস্ট অসমের পুনর্বিন্যাস নিয়ে জারি হওয়া নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করিমগঞ্জ এখন জেনারেল (সাধারণ) আসন হয়ে গিয়েছে। আর জেনারেল আসন থেকে ‘তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত’ আসনের তকমা পেয়েছে শিলচর। কিন্তু বিজেপি প্রাথমিক প্রার্থীতালিকায় শিলচরকে ‘জেনারেল’ হিসেবে দেখা গিয়েছিল।
শুধু সেখানেই ভুলের কাহিনী শেষ হয়নি। অসমের পুর্নবিন্যাস অনুযায়ী (যা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন), এখন তেজপুর বলে অসমে আর কোনও আসন নেই। এখন শোনিতপুর আসন আছে। একই ভুল হয়েছিল কলিয়াবর এবং মঙ্গলদইয়ের ক্ষেত্রে। ২০২৩ সালের পুনর্বিন্যাসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অসমে এখন ওই দুটি আসনের অস্তিত্ব নেই। এখন কাজিরাঙা এবং দারাং-উদলগিরি লোকসভা আসন হয়েছে।
সেইসব ভুল নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। অসন্তোষের মুখে পড়ে রবিবার সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। যেখানে করিমগঞ্জকে সাধারণ আসন হিসেবে দেখানো হয়েছে। শিলচরের পাশে জুড়েছে ‘তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত’ শব্দবন্ধ। তেজপুর, কলিয়াবর এবং মঙ্গলদই আসন পালটে শোনিতপুর, কাজিরাঙা এবং দারাং-উদলগিরি করা হয়েছে।