আজ, বুধবার দুপুরে ফরাক্কা এবং মালদা দক্ষিণে নির্বাচনী জনসভা করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সভার শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী রাতের অন্ধকারে গণনাকেন্দ্রে ঢোকা, মেশিন বদল করা–সহ একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম–দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে কোনও কোনও জায়গায় হঠাৎ করে ভোটের শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ফরাক্কার নির্বাচনী সভা থেকে এমনই গুরুতর অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী নির্বাচন কমিশনের কাছে আসল তথ্য প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি চলে যাওয়া নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিদায়ের ডাকও দেন তিনি। আর তারপরই ইভিএম বদল নিয়ে সুর সপ্তমে তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মিথ্যা কথা ভাঁওতা দিচ্ছে সব। ইভিএম কারা তৈরি করেছে। ১৯ লক্ষ ইভিএম মিসিং। এতে সন্দেহ মানুষের না হয়। বিজেপি নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেখতে চায় মানুষ। ভোটেও চিটিং করছে। প্রথম দুই দফায় কোথায়, কত শতাংশ ভোট পড়েছে সেটা সব সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও সেটা জানিয়েছে। গত রাতে শুনতে পেলাম, যেখানে বিজেপির কম ভোট হয়েছিল সেখানে হঠাৎ করে ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন নোটিশ জারি করেছে।’
আরও পড়ুন: ‘মেয়েরা সামনে ছায়ায় এসে বসুন, তারপর সভা শুরু করব’, চরম গরমে ‘মানবিক’ মমতা
অন্যদিকে বাংলায় ২৬ হাজার মানুষের চাকরি খেয়ে নিয়েছে বিজেপি বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। চাকরি খেয়ে নিচ্ছে বলে জানান। তাঁর বক্তব্য, ‘ওরা চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। আমার কাছে সরকারে এখনও ১০ লক্ষ চাকরি পড়ে আছে। চাকরি দিতে গেলেই কোনও না কোনও এজেন্সি পাঠিয়ে আটকে দিচ্ছে। ওদের একটা ভোটও দেবেন না। বিজেপিকে কেউ একটি ভোটও দেবেন না। ওরা বাংলাকে বঞ্চনা করেছে। বাংলার টাকা দেয় না। ওরা ২৬ হাজার মানুষের চাকরি খেয়েছে। এখন রাতে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে তালা ভেঙে মেশিন বদলে দিচ্ছে। যেখানে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে, সেখানকার ইভিএম এখানে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমার অনুরোধ গণতন্ত্রের নিরাপত্তা বজায় রাখুন মানুষের স্বার্থে।’
এছাড়া বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ইভিএম মেশিন পাল্টে দিচ্ছে বিজেপি। দেশের সব বিরোধী দলের উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ, ইভিএম মেশিনের হিসাব রাখতে হবে। দেশে ১৯ লক্ষ ইভিএমের খোঁজ নেই। সেগুলি বিজেপি এখন কাজে লাগাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে ইভিএমের সংখ্যা, ভোটারের সংখ্যা জানতে চাই। সব বিরোধী দলের সতর্ক হওয়া উচিত এবং প্রশ্ন তোলা উচিত। ইভিএম মেশিনের চিপ কারা তৈরি করেছে? এই সংখ্যাটা বাড়ল কী করে? সেটা আমরা জানতে চাই। আমরা তো ব্যালটে ভোট চেয়েছিলাম। আমরা অনেকেই জবাব চাইছি। কোনও জবাব দিতে পারছে না। ইভিএম হ্যাক করার নানা ব্যবস্থা করছে। আমাদের কাছে খবর এসেছে, কিছু প্রমাণ পেয়েছি।’