কোচবিহারের সভা থেকে চেনা মেজাজেই বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সিনেমা করার পরামর্শ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আবার মোদী–শাহকে বাংলায় এসে বিতর্কসভায় যোগ দিতে আহ্বান করলেন। যা সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার সমান বলে মনে করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আজকের জনসভা থেকে সরাসরি কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থীর নামও নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে তাঁর চড়া সুরে সরব হওয়া নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী এদিন চাঁচাছোলা ভাষায় সরব হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের বুথে জুলুম করলে, অত্যাচার করলে, মা–বোনেদের বসিয়ে দেবেন। ওরা রান্না করে, বাড়ির কাজ করে, সব পারবে। নির্বাচন কমিশন কে বলবো নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করুন। আমরা সেলুট করবো। বিজেপির কথা দয়া করে শুনবেন না। বিচারালয়ে এমন জাজমেন্ট হচ্ছে যা দেখেই বোঝা যায় সব। সকলে নয় কিছু কিছু আছে যারা বিজেপি নেতাদের মতো কথা বলছে। চাকরি খেয়ে এখন নির্বাচনে লড়াই করছে। লজ্জাও করে না। তৃণমূল কে বলছে চোর। এরা তো ডাকাত। দেশ বেচেছে। নির্লজ্জ বেহায়া একটা রাজনৈতিক দল। লজ্জা। বিজেপি ছি।’
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন থাকবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, ভোটকর্মীদের জন্য রাজ্যের উদ্যোগ
অন্যদিকে এরপরই মুখোমুখি বিতর্কসভায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিতর্কসভায় যোগ দিতে বলেছেন। তবে এই বিতর্কসভা নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘মুখোমুখি এসে বসো দেখি। কে মিথ্যা কথা বলছে জনতা বিচার করবে। ৪০০ পার বলছো কেন? বলো ৪২০ পার করবে। তবে না কেন্দ্রে ৪২০ সরকার তৈরি হবে। ভিক্ষা চাইলে আমি জনতার থেকে চাইব। দিল্লির কাছে হাত পাতবো না। কারণ মোদীর গ্যারান্টির কোনও ভরসা নেই। মোদীর গ্যারান্টির কোনও ওয়ারেন্টিই নেই। আমরা বলেছিলাম বিনা পয়সায় রেশন দেব। রেশন পান কি পান না? আমরা তো বন্ধ করিনি একদিনের জন্যও। মোদীবাবু ছবি লাগিয়ে কোভিডে ৬ মাস দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কোভিডে একটা ইঞ্জেকশন দিয়েছেন। তাতেও নিজের ছবি লাগিয়েছেন। এতো আত্মপ্রচার করতে ভালবাসেন। সিনেমায় নামা উচিত।’
এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক প্রশ্ন তুলে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমি আপনাদের ঘরের লোক। ডাকলেই পাবেন। না ডাকলেও পাবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগরিকত্ব নিয়ে বলতে গিয়ে বলছেন, ও হ্যায় কাহা। মানে আমরা নাগরিক নই। তুমি বাইরে থেকে এসে নাগরিক? আমি বাংলায় বাস করে নাগরিক নই? তাই গুন্ডার বিরুদ্ধে নামুন। মোটরবাইক নিয়ে ঘোরে। গুন্ডা নিয়ে ঘোরে। আর পুলিশ প্রশাসন দেখেও চুপ। কী হবে? সরিয়ে দেবে? কোচবিহারে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে অসুবিধা হলে আমি ছেড়ে কথা বলব না। সব থেকে বড় চোর আপনার প্রার্থী। ওকে ধরুন। মানুষের ভাষায় শোভনীয়তা থাকা দরকার। ভোটের সময় ভোট চাইতে চলে আসে দিল্লি থেকে। ভোট হয়ে গেলে আর মনে রাখে না। আমাদের বাসুনিয়া সাহেব নিপাট ভদ্রলোক। আর বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে কাকে? দানব দস্যু। কত কেস আছে তার বিরুদ্ধে?’