লোকসভায় মহুয়া মৈত্র জোরে-জোরে কথা বলতেন। বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াতেন। সেজন্য তাঁর সাংসদপদ খারিজ হয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়া সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাব মাঠের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘মহুয়ার উপর কী অত্যাচার হয়েছে, দেখেছেন? ওকে লোকসভা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ ও জোর-জোরে কথা বলত, বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলত বলে। ভোটে দাঁড়ানোর পরেও (অত্যাচার চলেছে)। ওর বাবা-মা বেচারা কিছু জানেন না। তাঁদের বাড়িতে গিয়েও রেড করে এসেছে। যেমন করে হোক, মহুয়াকেই হারানোই ওদের লক্ষ্য। মহুয়াকে জেতাবেন।’
উল্লেখ্য, গত বছর ৮ ডিসেম্বর লোকসভা থেকে মহুয়াকে বহিষ্কৃত করা হয়। ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন করা মামলায় তাঁকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি। পরবর্তীতে সংসদের নিম্নকক্ষে সেই প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। যা ধ্বনিভোটের মাধ্যমে পাশ হয়ে গিয়েছিল লোকসভায়। তার ফলে লোকসভা নির্বাচনের চার মাস আগে মহুয়ার সাংসদপদ খারিজ হয়ে যায়। তবে তাঁর উপরই আস্থা রেখেছেন মমতা। কৃষ্ণনগর থেকেই তাঁকে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। যে আসন থেকে ২০১৯ সালে জিতেছিলেন মহুয়া।
তারইমধ্যে গত সপ্তাহের শনিবার আলিপুর, কৃষ্ণনগর, করিমপুর-সহ মহুয়ার বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। টাকা নিয়ে সংসদে আদানি গ্রুপ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার মামলায় সেই অভিযান চালানো হয়। তারইমধ্যে ফেমার (ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট) আওতায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কিন্তু ইডি অফিসে হাজিরা দেননি মহুয়া।
সেই সমন এড়ানোর প্রেক্ষিতে নদিয়ার কালিয়াগঞ্জের জনসভা থেকে মহুয়া বলেন, 'ইডি নিজের কাজ করবে। আমি আমার কাজ করব। আর সেটা হল যে আমি আবার প্রচারের কাজ চালিয়ে যাব।' যদিও পালটা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রসঙ্গ টেনে মহুয়াকে খোঁচা দেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, 'উনি কেন্দ্রীয় এজেন্সির সমন এড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় তাঁর। যিনি একাধিকবার ইডির তলবে সাড়া দেননি।'