সন্দীপ ভাস্কর
এই ভোট এলেই বোঝা যায় কত অদ্ভূত সমস্যায় জর্জরিত এই দেশের মানুষ। এই যেমন বিহারের পূর্ব চম্পারনের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের এক মহা সমস্যা। বন্যায় তাদের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আর তার জেরে গত চার বছর ধরে এলাকার যুবকদের এমন অবস্থা যে তাদের আর কেউ বিয়েও করতে চাইছেন না। আসলে বছর বছর যদি বন্যা আসে আর সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় তবে কি আর এলাকার ছেলেদের বিয়ে হয়?
এদিকে ভোট এসেছে। নেতারাও গ্রামে প্রচারে আসছেন। আর তখনই স্থানীয় যুবকদের একটাই আর্জি এবার একটা ব্যবস্থা করুন। না হলে তো আর কোনও দিন বিয়েই হবে না।
ভবানীপুর গ্রামের অন্তত ৮০টি পরিবারে কার্যত সহায় সম্বলহীন অবস্থায় গন্ডক নদীর পাড়ে চলে আসে। ২০২০ সালের বন্যা তাদের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মোতিহারি থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে এই জায়গাটি পড়ে।
মহম্মদ সাবির নামে এক বাসিন্দা বলেন, ভোট নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। অন্যান্য কোন সমস্যার কথা বলব। একের পর এক বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আমরা কোথায় যাব এবার! গত চার বছরে গ্রামে কোনও সানাই বাজেনি। বিয়েই হয়নি কোনও যুবকের।
এই যেমন আমারুল খাতুন। তার এখন বিরাট চিন্তা যে তার ২৫ বছর বয়সের ছেলের বিয়ে হবে কি করে?
রীতিমতো কান্নাকাটি করছেন তিনি। তিনি বলেন, চার চারটে বিয়ের কথা ভেঙে গেল। কেউ মেয়ে দিতে চাইছে না। নদী আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। এখন সেই নদীর ধারে বাস করি। আমাদের কোনও জমিজমা কিচ্ছু নেই। আমাদের নিজেদের ঘরবাড়ি কিছু নেই। আমাদের জীবন একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, ২০২০ ও ২০২১ সালে একের পর এক বন্যায় তারা সব হারিয়ে ফেলেন। কোনওরকমে নদীর উঁচু পাড়ে এসে তারা ঘর বাঁধেন। কিন্তু সেখানেও সমস্যা। এভাবে ঘরছাড়াদের কাছে আর কে বিয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে এখন ভোট এসেছে। কিন্তু একেবারে হতাশ এলাকার বাসিন্দারা।
তাঁরা বলেন, ২০২২-২৩ এ আর বন্যা আসেনি। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। আতঙ্ক গোটা এলাকাকে গ্রাস করেছে। তার জেরে কেউ আর মেয়ে দিতে চান না। মহম্মদ আব্বাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, দেখুন আমাদের একটাই দাবি আমাদের জন্য জমির ব্যবস্থা করে দিন। আমরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই।