আগামী ১৩ মেয়ে চতুর্থ দফার ভোট রয়েছে বীরভূমে। তার আগে সেখানে বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়ল। এবার বিজেপির প্রার্থী সমর্থনে ভোট না করানোর আবেদন জানিয়ে একটি পোস্টার পড়েছে বীরভূমের সিউড়ি শহরে। আর সেই পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে বীরভূমের স্থানীয় এক বিজেপি নেতার নাম। আবার যে বিজেপি নেতার নাম করে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে সেই বিজেপি নেতা তৃণমূলকে নিশানা না করে দলের কর্মীদের একাংশের দিকে অভিযোগ তুললেন। তা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির অন্দরে। এই পোস্টারকে ঘিরে বীরভূমে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেবাশিস ধরকে ঠাণ্ডা করতে উদ্যোগ নিল বিজেপি, আনা হল দলের রাজ্য কমিটিতে
এর আগে বীরভূমে প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল বিজেপিকে। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধরকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছিলেন। ফলে তাঁর জায়গায় দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তবে দেবতনুকে প্রার্থী করলেও ইতিমধ্যে দেবাশিসের নামে বীরভূমে অনেক দেওয়াল লিখন রয়েছে। ফলে বিজেপি প্রার্থী আসলে কে? তা নিয়ে দলের কর্মী এবং ভোটারদের মধ্যে বেশ বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সেই আবহে সিউড়ির স্থানীয় বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডলের নাম করে একটি পোস্টার পড়েছে।
পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘বিজেপির প্রার্থী আসলে কে তা বোঝা যাচ্ছে না। দেবাশিসের নামে দেওয়াল রয়েছে। আবার দেবতনুর নামে প্রচার চালানো হচ্ছে। বিজেপি নেতারা এ বিষয়ে স্পষ্ট করছেন না। তাই কর্মীরা ভোট করানো থেকে বিরত থাকুন।’ আর এই পোস্টারের একেবারে নিচে লেখা রয়েছে কালোসোনা মণ্ডলের নাম। তাতেই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে।
তবে এই পোস্টারের কথা অস্বীকার করে কালোসোনা মণ্ডল আবার যে বক্তব্য পেশ করেছেন তাও বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তিনি জানান, এটা তাঁর কাজ নয়। তবে তাঁর সন্দেহ দলের কেউ এই কাজ করেছে। বিজেপি নেতা জানান, তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা পুরোদমে দেবতনু ভট্টাচার্যের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
তাঁর অভিযোগ দলের মধ্যে প্রশান্ত কিশোরের অনেক লোকজন রয়েছে। এটা তাদের কাজ হতে পারে। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির মধ্যে তৃণমূল ঢুকে রয়েছে। এটা তাদেরই কাজ। এই ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন কালোসোনা মণ্ডল। তিনি জানিয়েছেন, কে পোস্টার মেরেছে তা জানতে তিনি থানায় অভিযোগ জানাবেন। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, এই ঘটনা বীরভূম জেলা বিজেপি নেতৃত্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে আরও একবার প্রকাশ্য আনল বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বের অস্বস্তি যা ছিল তা আরও বেশি বৃদ্ধি পেল সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না।