এবার আর অপরূপা পোদ্দার টিকিট পাননি আরামবাগে। এনিয়ে অপরূপার অভিমান কিছু কম হয়নি। এবার সেই জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে মিতালি বাগকে। কিন্তু অপরূপাকে বাদ দিয়ে কেন মিতালিকে প্রার্থী করা হল?
মমতা জানিয়েছেন, 'মিতালি বাগদি সম্প্রদায়ের মেয়ে। উচ্চশিক্ষা নিয়েছে। অনেকে বলেন বাগদি বাউরিরা টিকিট পান না। আমরা ওঁকে টিকিট দিয়ে তা প্রমাণ করে দিয়েছি।'
সেই সঙ্গেই মমতা বলেন, ‘এর আগে কেউ ভুল করে থাকলে আমরা ভুল শুধরে নিয়েছি। এই কেন্দ্রে এবার আমরা নতুন প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছি। মিতালি প্রান্তিক ঘরের মেয়ে। ওঁকে জেতান।’
২০১৪ ও ২০১৯ সালে অপরূপা এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। শেষবার মাত্র ১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে তিনি জয়ী হয়েছিলেন। আর এবার সেই অপরূপাকে আর টিকিট দেয়নি তৃণমূল। এবার একেবারে আনকোরা প্রার্থী।
তবে টিকিট না পাওয়ার পরে প্রথমদিকে দলের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছিলেন অপরূপা। তবে পরের দিকে তিনি কতটা দলের বর্তমান প্রার্থীকে সঙ্গ দিচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে জয়ী টানা ২ বারের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার নিজেকে দলের ‘সত্যিকারের সৈনিক’ বলেই মন্তব্য করেছিলেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিজেপি যদি তাঁকে তাজমহল বা লালকেল্লা এনে দেয় তাও তিনি বিজেপিতে যাবেন না। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালোবাসেন, তৃণমূল দলকে ভালবাসেন। তিনি দলের একজন সত্যিকারের সৈনিক। এমন মন্তব্য করে অপরূপা বুঝিয়ে দিলেন, তিনি দলের সঙ্গে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। একইসঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেবেন না বলেও স্পষ্ট করে দিলেন অপরূপা পোদ্দার। দলের সিদ্ধান্তে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই বলেই স্পষ্ট করেছিলেন তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ।
তবে আরামবাগে দলের অন্দরে কান পাতলে অবশ্য় অন্য় কথা শোনা যায়। অপরূপাকে নিয়ে নানা কানাঘুষো লেগেই আছে। তবে মমতা সরাসরি অপরূপার নাম না বললেও দলের অন্দরে কোথাও যে একটা সমস্যা হয়েছিল অপরূপাকে নিয়ে তা নিয়ে ইঙ্গিতও দেন তিনি।
তবে মিতালি অবশ্য় ইতিমধ্যেই এলাকায় দাপিয়ে প্রচার করছেন। এলাকায় নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য তিনি চেষ্টা কোনও ত্রুটি করছেন না। তবে এর আগে আরামবাগে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের একটু সতর্ক করলাম, আগামীদিন যদি রক্তারক্তি না চান, আমাদের কেউ বদমাইশি করলে আমি ডেকে তাকে ২টো থাপ্পড় মেরে তাড়িয়ে দিতে পারি। কিন্তু বিজেপি সেটা করবে না। সব সিপিএমের হার্মাদ বিজেপি হয়ে গেছে। টাকা দিয়ে ভোট কিনছে। আমাদের নেতৃত্বকে বলব, অনেক কষ্ট করে এই আরামবাগ উদ্ধার করা হয়েছে। আমি ছোট না ও ছোট ডোন্ট কেয়ার। মানুষকে কেয়ার করুন আর কোনও কিছু করার প্রয়োজন নেই।’