তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। নিহত কোরবান শাহের পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। সঙ্গে তিনি ফের আনিসুরকে গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই রায় রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল নেতা কোরবান শাহ খুনে অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জারি সেই নির্দেশ তমলুক আদালতে পেশ করলে মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দেন বিচারক। এর পর তমলুক হাসপাতালে ভর্তি আনিসুরকে মুক্তি দেয় জেল কর্তৃপক্ষ। আনিসুরকে মালা পরিয়ে নিয়ে রওনা দেন তাঁর অনুগামীরা।
ওদিকে ততক্ষণে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কোরবান শাহের পরিজনরা। তাঁদের দাবি, আনিসুর মুক্তি পেলে কোরবান শাহ হত্যার কোনও বিচার হবে না। উলটে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি বাড়বে। সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, কলকাতা হাইকোর্টেই একাধিকবার আনিসুর রহমানের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার। এখন হঠাৎ কী হল যে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে চাইছে তারা? একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের নির্দেশ ও নিম্ন আদালতের যাবতীয় রায় বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিচারপতি। স্থগিতাদেশ দেন এই মামলার শুনানিতে। সঙ্গে আনিসুরকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়ে থাকলে তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতারির নির্দেশ দেন তিনি।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় এই আনিসুরের মোটরসাইকেলে করেই তমলুকে পৌঁছেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর খুনের মামলায় জড়ান আনিসুর। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর আনিসুরকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মেদিনীপুরে শুভেন্দুর বিকল্প হিসাবে আনিসুরকে তুলে ধরতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু আদালতের আজকের রায়ে পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে গেল।