বাংলায় ‘পরিবর্তন’-এর ডাক দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। দাবি করলেন, স্বাধীনতার সময় দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ যে শিখরে ছিল, সেখান থেকে ক্রমশ পদস্খলন হয়েছে। তাই ‘স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পরিবর্তন’-এর সওয়াল করেন। তা নিয়ে পালটা তৃণমূল কংগ্রেসের কটাক্ষ ‘বিজেপির মনিবদের খুশি করার খেলায়’ মেতেছেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্বভারতীতে গিয়েছিলেন ধনখড়। ফেরার সময় হেলিপ্যাডের কাছে সাংবাদিকদের সামনে ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে সওয়াল করেন। শুধু একবার নয়, একাধিকবার ধনখড়ের গলায় শোনা যায় ‘পরিবর্তন’ শব্দ। যে স্লোগান দিয়ে ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর বিজেপির নেতারা এবার সেই ‘পরিবর্তন’-এর ‘পরিবর্তন’ করার ডাক দিয়েছেন। ধনখড় বলেন, ‘২০২১ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের শুরু হবে। স্বাধীনতার সময় পশ্চিমবঙ্গ কোথায় ছিল? কোন শিখরে ছিল। কত উদ্যোগ ছিল। দেশের জন্য কত অবদান ছিল। দশকের পর দশক ধরে কীভাবে তা নীচে নামতে থাকল। ভাবুন, এরকম কেন হয়েছে? কীভাবে হয়েছে? কী কারণে হয়েছে? এটা কি হওয়া উচিত ছিল? যখন ৭৫ সাল হবে, তখন পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গকে (আবারও) শিখরে যেতে হবে।’
সেখানেই অবশ্য থামেননি ধনখড়। বরং কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের তুলনা টেনেও কটাক্ষ করেন। দেশের যে ‘পরিবর্তন’ হয়েছে, তার গুণগানও করেন। তবে কোন সময় সেই ‘পরিবর্তন’-এর সাক্ষী থেকেছে দেশ, সে বিষয়ে কিছু জানাননি। শুধু বলেন, 'নিম্ন মানসিকতা এবং নেতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কখনও কাজ করা হয় না। দেশ কত বদলে গিয়েছে। কী ব্যাপক হারে পরিবর্তন এসেছে। কতটা মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। কীভাবে বিশ্বে আমাদের মাথা উঁচু আছে। এটা ভাবনার বিষয়। এটা গর্বের বিষয়।' সেই সঙ্গে বীরভূমের সাংবাদিকদের সঙ্গে 'চায়ে পে চর্চা' করারও কথা বলেন রাজ্যপাল। যে নামে আবার কর্মসূচি আছে বিজেপির।
সেই মন্তব্য নিয়ে যথারীতি বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল শিবিরের প্রশ্ন, সাংবিধানিক পদে থেকে কীভাবে বিধানসভা ভোটের এধরনের কথা বলছেন ‘বোধবুদ্ধিহীন’ রাজ্যপাল। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘রাজ্যপালের মাথার ঠিক নেই।’ সঙ্গে বলেন, ‘যেনতেনভাবে বিজেপির মনিবদের খুশি করার খেলায় মেতে আছেন উনি।’ একই সুরে রামপুরহাটে দলীয় সভা থেকে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘ভারতীয় আইনে রাজ্যপালের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই। তবে (নরেন্দ্র মোদীর) আইনে আছে।’