তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী। বিজেপিরও বিরোধী। আবার তাঁদের ভোটব্যাঙ্ক ট্রান্সফার হয়েছিল বিজেপিতে। সালটা ২০১৯। লোকসভা নির্বাচনে। যার জন্য আসন সংখ্যা বেড়েছিল বিজেপির। আর তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল বামেদের। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য সমীকরণ আলাদা। এখন বিজেপিকে ঠেকানোই প্রধান লক্ষ্য। তাই সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা নেমে পড়েছেন প্রচারে। আর প্রচারে নেমে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে খেয়ে এলেন মুড়ি। তাও আবার পার্টি অফিসে গিয়ে। হ্যাঁ, তিনি সিপিআইএম নেতা তথা সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য। রবিবার এই অভিনব প্রচারের সাক্ষী থাকল গোটা দুর্গানগর এলাকা। সৌজন্য প্রতি সৌজন্য দেখল রাজ্য–রাজনীতি।
এদিন প্রচারে যান তন্ময় ভট্টাচার্য। প্রচার করতে করতে ঢুকে পড়েন স্বাধীনতা সংগ্রামী মাধব দে স্মৃতি ভবনে। যেটা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বাটি থেকে মুড়ি খেয়ে রীতিমতো গল্পও জুড়ে দেন। তারপর স্থানীয়দের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে বলতে শুরু করেছেন সৌজন্যের আড়ালে কী এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট চান তন্ময় ভট্টাচার্য।
তবে এই ‘সৌজন্য প্রচার’–এর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই এক বামপন্থী সমর্থক লিখেছেন, ‘আজ দুর্গানগরে ভোট প্রচারে এক অভিনব সৌজন্য দেখা গেল! এই ছবিগুলিই হয়ে উঠুক বাংলারর আদর্শ। আমরা কোভিড ও আমফানে বহু নাগরিককে হারিয়েছি! তাই এখানে বজায় থাকুক সৌভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা এবং সম্মান।’
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘সৌজন্যের রাজনীতি’র পথ বেছে নিয়েছে দলগুলি। কিছুদিন আগে খেজুরির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পার্থপ্রতিম দাস বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে হাতজোড় করে ভোট চেয়েছিলেন। এবার সেই একই ছবি দুর্গানগরেও। তবে তন্ময় ভট্টাচার্যের এই অভিনব প্রচার নিয়ে দলের অন্দরে একাংশ আপত্তি তুলেছে। প্রকাশ্যে না হলেও ঘনিষ্ঠমহলে তাঁরা বলেছেন, এতটা না করলেও পারতেন তন্ময়।
যদিও বর্ষীয়ান নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের সাফাই, ‘৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটিয়ে যাঁরা ‘পরিবর্তন’ এনেছিলেন, তাঁদের সকলেই ‘অশিক্ষিত বা অভব্য’ নন। অনেকেই আছেন, যাঁরা মানুষের কথা ভাবেন, মানুষের হয়ে কাজ করেন। তাঁদের জন্যই এই সম্প্রীতির বার্তা।’ যাদবপুরের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ‘সম্প্রীতির রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গে বরাবরই ছিল। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার আসার পর সেই সৌজন্যবোধ নষ্ট হয়েছে।’