করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে এ রাজ্যে। মারণ ভাইরাস দাঁত—নখ ফুটিয়েছে কলকাতা—সহ জেলাগুলোর আনাচে-কানাচে। বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের মিটিং—মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কলকাতা হাইকোর্টও কমিশনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছে। আবার প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল বাতিল করেছে সমস্ত মিটিং-মিছিল কর্মসূচি। শুধু ব্যতিক্রম বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলার সফর বাতিল করা সত্বেও অভিযোগ উঠেছে ছোট ছোট সভা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এরকমই একটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচি থেকে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন দিলীপ ঘোষ।
বিদ্ধ করলেন একাধিক ইস্যুতেও। শেষ দু’দফা ভোটের আগেই বীরভূমে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। ছোট ছোট জনসভা ও স্ট্রিট কর্নার করে চলেছেন দিলীপবাবু। সেখান থেকেই এদিন তোপ দাগলেন তিনি। বললেন, ‘বদমাইশি করলে, কপালে কষ্ট আছে।’
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির জন্য বারবার বিজেপিকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘করোনার সময় মানুষকে ভগবানের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা রোগী এর আগে রাস্তায় পড়ে মরে থাকতেন। চিকিৎসক—নার্সদের পিপিই কিট পর্যন্ত দিতে পারেনি সরকার। মৃত দেহকে যেভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে, এরকমটা আগে কখনও কোনও সভ্য দেশে হয়নি। জল নেই, ওষুধ নেই। ডাক্তাররা মারা গিয়েছেন, আর উনিও বলছেন যে সকল সরকারি কর্মচারীরা অসুস্থ হলে, তাঁদের এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।’
দিলীপবাবু আরও বলেন, ‘এক দু’জনকে দিয়ে সমস্ত টাকা খেয়ে নিয়েছে। কাউকে দেওয়া হয়নি। সে কারণে তার এই ব্যাপারে বলার কোনও অধিকার নেই।’ মমতার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘ উনি বলেছিলেন বিনামূল্যে টিকা দেবেন। এখন তো কেন্দ্র অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। তাহলে এবার উনি ওগুলো কিনে বিনামূল্যে সকলকে দিন। আমরা দেখতে চাই উনি পারেন কি না।’
অন্য দিকে, ভোটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন সঠিক, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করাচ্ছে বলে উনার ভয়। উনি লুঠ করতে পারছেন না। উনার গুন্ডা ভাইয়েরা চিৎকার করে কিছু করতে পারছেন না। লোক গিয়ে ভোট দিচ্ছে। এখনও কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর ভরসা আছে সাধারণ মানুষের। তাই উনার উপরে এখন আর কেউ ভরসা রাখেন না। দু’ তারিখের পর উনাকে থানা ঘেরাও করতে হবে। আর কিছু করার থাকবে না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হোয়াটস অ্যাপের চ্যাট ফাঁস হওয়া প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। অফিসাররা নিজের মধ্যে কথা বলছেন, এতে অসুবিধার কি আছে। সব জায়গাতেই ৮০ শতাংশের উপর ভোট হচ্ছে। বীরভূম জেলাতেও ৮০ শতাংশের উপরে কেউ আটকাতে পারবে না।’ তাঁর দাবি, বীরভূমের বেশিরভাগ আসনেই বিজেপি পাবে। আগের দফাগুলো যেমন শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে, পরের দফাগুলোতেও একই রকম ভোট হবে। কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী ভাট করাবে। যারা বদমাইশি করার চেষ্টা করবে, তাদের কপালে কষ্ট আছে।’