জি বাংলার ‘মুকুট’ ধারাবাহিক আর বিতর্ক দুই যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে! কিছুদিন আগেই এই ধারাবাহিকের দোল চরিত্র থেকে সরে যান শ্রীপর্ণা রায়। এরপরই আরও এক অভিনেতা সরে গেলেন। যুধাজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় যে এই ধারাবাহিক থেকে সরলেন সেটাই নয় তিনি রীতিমত এই ধারাবাহিকের প্রোডাকশন হাউজের তরফে ক্ষোভ উগড়ে দেন ফেসবুকে।
‘মুকুট’ ধারাবাহিকে অন্যতম নেতিবাচক চরিত্র রমণীমোহন হালদারের বেশে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তিনি এই প্রযোজনা সংস্থার মুকুট সহ নায়িকা নম্বর ১ দুটো ধারাবাহিক ছেড়ে দেন। এবং ক্ষোভ উগড়ে বলেন 'শিল্পীর মানহানি করে শিল্পকে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয়টা আর সহ্য হলো না। ভালোবেসে কাজটাই শুধু করতে পারি আর সেটুকুই করি। বিদায় অহংকার।’
তাঁর এই কথার পর এদিন ব্লুজ প্রোডাকশন হাউজে যাঁরা কাজ করেন, যে শিল্পীদের বিভিন্ন ধারাবাহিকে দেখা যায় তাঁরা সকলেই একত্রিত হয়েছিলেন। ‘জগদ্ধাত্রী’, ‘মুকুট’ এবং ‘নায়িকা নম্বর ১’ -এর কলাকুশলীরা এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে সমবেত ভাবে যুধাজিতের বিরোধিতা করেন।
বাচিক শিল্পী তথা অভিনেত্রী সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা সবাই এখানে একটা পরিবারের মতো হয়ে কাজ করি। যাঁরা একটা সময় এখানে পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন তাঁরা বেরিয়ে গিয়ে যে এই প্রোডাকশন হাউজের নাম কুৎসা ছড়াচ্ছেন সেটা আমরা কেউ মানি না। মানব না।'
অভিনেত্রী প্রেরণা পাল, যাঁকে এখন ‘জগদ্ধাত্রী’ ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে তিনি বলেন, 'যদি এখানে সত্যিই সবাইকে অসম্মানিত করা হয়ে থাকত, তাহলে দিনের পর দিন এখানে এতগুলো মানুষ ভয় নিয়ে কাজ করতে পারত না। দাদা (স্নেহাশিস চক্রবর্তী) সকলের ভালো মন্দের দিকে খেয়াল রাখেন। কারও কম দিন পড়লে তাঁকে সেটা ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। শুধু কাজ নয় ব্যক্তিগত কোনও অসুবিধা হলেও তিনি পাশে দাঁড়ান। উনি এসব বলে আদতে আমরা যাঁরা এখানে কাজ করি তাঁদের অপমান করলেন।' আরেক অভিনেতা বলেন, 'অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থাকে বলছি, ওঁকে কাজে নেওয়ার আগে ভাববেন। চরিত্রের খাতিরে ২-৫ দিন কাজ না পেলেই, বসিয়ে রাখলেই বাইরে এসে এসব বলবে কিন্তু! ঘরের সমস্যা ঘরে না মিটিয়ে বাইরে কেন এভাবে বলে বেড়ান?'
‘মুকুট’ তথা ‘মাধবীলতা’ ওরফে শ্রাবণী ভুঁইয়া ব্লুজ প্রোডাকশন হাউজের সঙ্গে একাধিক কাজ করেছেন। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন 'গত সরস্বতী পুজোয় উনি এসে কাজ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন কাজ করতে চান। তখন আমরা কেউ কী করে বুঝব যে ওঁর ভিতর ভিতর এসব চলছে?' একই মত অভিনেত্রী মৌমিতা গুপ্তর। তিনি জানান তিনি দীর্ঘ ১৯-২০ বছর স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করেছেন কখনও কোনও অসম্মান বা খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েননি। চরিত্র অনুযায়ী দিন কম বেশি পড়তে পারে কিন্তু সেটা ইচ্ছাকৃত নয়।
এদিন ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায়, অঙ্কিতা মল্লিক ওরফে ‘জগদ্ধাত্রী’, সহ একাধিক অভিনেতা অভিনেত্রীরাই উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সকলেই প্রযোজকের পাশে থেকে রীতিমত কটাক্ষ করেন যুধাজিতের। ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁর বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তোলেন তিনি কীভাবে তাঁদের অপমান করতে পারেন এভাবে তাঁর কথার মাধ্যমে?