না ফেরার দেশে হগওয়ার্টসের সবচেয়ে জনপ্রিয় হেডমাস্টার 'অ্যালবাস ডাম্বলডোর' ওরফে অভিনেতা মাইকেল গ্যামবন! দুই মলাট হোক কি বড় পর্দা, হ্যারি পটার বিশ্বজুড়ে একটা ফেনোমেলা। যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বুঁদ করে রেখেছে গত ২৩ বছর ধরে। জেকে রাউলিং-এর কাহিনি নির্ভর হ্যারি পটার ফিল্ম সিরিজের শেষ ৬-টিতে হগওয়ার্টসের হেডমাস্টারের চরিত্রে অভিনয় করে তাক লাগিয়েছেন অভিনেতা মাইকেল গ্যামবন। ৮২ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। তাঁর মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন তাঁর প্রতিনিধি।
পরিবারের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চলে গিয়েছেন তিনি। পরিবার জানিয়েছেন, ‘আমরা শোকসন্তপ্ত আমাদের সকলের প্রিয় স্যার মাইকেল গ্যামবন। প্রিয় স্বামী এবং দায়িত্ববান পিতা, হাসপাতালে শেষবারের মতো শান্তিতে ঘুমিয়েছেন। সেইসময় তাঁর পাশেই ছিল স্ত্রী অ্যানি এবং পুত্র ফেরগুস’।
রিচার্ড হ্যারিসের মৃত্যুর পর প্রফেসর ডাম্বলডোরের চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তোলার গুরু দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মাইকেল গ্যামবন। তারপর সাফল্যের সঙ্গে সেই ভূমিকা পালন করেছেন বছরের পর বছর। হ্যারি-হারমাইনি এবং রনের পাশাপাশি রেজে রাউলিং-এর উপন্যাসের সবচেয়ে চর্চিত দুই চরিত্র হল ‘প্রফেসর স্নেইপ’ এবং 'অ্যালবাস ডাম্বলডোর'।
এদিন হ্যারি পটারের অফিসিয়্যাল এক্স অ্যাকাউন্টে অভিনেতার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে জানানো হয়, ‘স্যার মাইকেল গ্যামবনের মৃত্যুর খবরে আমরা মর্মাহত। সারা বিশ্বের হ্যারি পটার প্রেমীদের উনি নিখাদ বিনোদন, আনন্দের রসদ জুগিয়েছেন তাঁর রসবোধ, মমতা আর দয়ার মাধ্যমে। তাঁর স্মৃতি আজীবন আমাদের হৃদয়ে থাকবে’।
রঙ্গমঞ্চে শুরু হয়েছিল জন্মসূত্রে আইরিশ এই অভিনয় জীবন। রয়্যাল ন্যাশন্যাল থিয়েটারে লরেন্স ওলিভারের সঙ্গে মাইকেলের যাত্রাপথ শুরু। হ্যারি পটার ফিল্ম সিরিজ ছাড়াও ‘ওথেলো’, ‘দ্য ইনসাইডার’, ‘দ্য উইংস অফ দ্য ডাব’, ‘দ্য কিংস স্পিচ’-এর মতো ছবির জন্যও দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা। মাইকেল গ্যামবন দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতেও। জিতেছেন চারটি বাফটা পুরস্কার। তবে তাঁর কেরিয়ারের গোড়ার দিকটা জুড়ে ছিল ব্রিটিশ ব্রডওয়ে থিয়েটার। ১৯৯৮ সালে ব্রিটিশ রাজ পরিবার গ্যামবনকে নাইটহুড উপাধিতে সম্মানিত করে।
দীর্ঘ পাঁচ দশকের ফিল্মি কেরিয়ারের অজস্র চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে হ্যারির রক্ষাকর্তা ডাম্বেলডোর হিসাবেই দর্শক সবচেয়ে বেশি মনে রেখেছে তাঁকে। হ্যারি পটারের লেগাসি যত দিন থাকবে ততদিন দর্শক হৃদয়ে ‘ডাম্বেলডোর’ হিসাবে উজ্জ্বল থাকবে মাইকেল গ্যামবনের নাম।