'আজ এ গানের তালে হৃদয় দোলে/মিঠে বাতাস যায় রে বয়ে/হলুদ ধানের দোদুল দোলায় পিয়াসী মন দোলে/ওলো সুজন আমার ঘরে তবু আইল না/এ পোড়া মনের জ্বলন কেন বুজল না' এই গানটি শোনেননি এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কিন্তু তেমনই খুব মানুষই জানেন যে এটা পরশপাথর ব্যান্ডের গান। গানটি গেয়েছেন এবং লিখেছেন অনিন্দ্য বসু। যেহেতু গানটির ভাষা বা সুর লোকসঙ্গীতের মতো তাই অনেকেই ধরে নেন এটাও বুঝি কোনও প্রচলিত লোকগান। কিন্তু সেটা নয়। আর নেটিজেনদের বারবার এই এক ভুল দেখতে দেখে বিরক্ত হয়ে গিয়েছেন গায়ক। নিজের গানকে প্রচলিত গান বলে চলতে দেখে ক্ষোভ উগরে দিলেন শহর ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট অনিন্দ্য বসু।
ফেসবুকে কী লিখলেন অনিন্দ্য?
এদিন ফেসবুকের পাতায় অনিন্দ্য বসু ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজেনদের বিরুদ্ধে। যাঁরা মনে করেন যে সুজন গানটি আদতে একটি লোকগান তাঁদের একহাত নিয়ে একটা লম্বা পোস্ট করেন। জানান এটি আদ্যোপান্ত তাঁর লেখা এবং গাওয়া গান।
আরও পড়ুন: '১০টাই বক্স অফিসে!' সৃজিতের পুজো রিলিজ মানেই হিট! ছবির তালিকা দিয়ে কী লিখলেন?
আরও পড়ুন: ছিল 'বাঙালি' হল 'বাংলা'! রাজ্য সঙ্গীতে বদলে গেল রবি গানের লিরিক্স
অনিন্দ্যর কথায়, 'গানটা যথেষ্ঠ জনপ্রিয়। পাড়ার স্টেজ থেকে শুরু করে নামীদামী টিভি চ্যানেলগুলোতে এই গান গাওয়া বা এর সঙ্গে নাচ আজও চলছে। বেশ ক'দিন ধরে একটা কথা কানে আসছে যে এই গানটা প্রচলিত বা লোকগান! এমনকি কিছুদিন আগে আমাকে আমার এক ভাই দু-চারটে ভিডিয়ো দেখাল, লোকজন দিব্য প্রচলিত লোকগান হিসেবেই নাচছে, গাইছে! বাংলাদেশের এক শিল্পীকে তো দেখলাম নিজের মতো কথা সুরে, নিজস্ব মনের মাধুরী মিশিয়ে, 'বাউল' সেজে গানটার মিউজিক ভিডিয়োও বানিয়ে ফেলেছেন!'
এদিন অনিন্দ্য তাঁর পোস্টে আশা অডিওর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন। লেখেন, 'আশা অডিও মানে এই গানের সেলিং কপিরাইট যাদের কাছে তারা কি এসব ঘটনা জানেন? বোধহয় জানেন, ব্যবসা করছেন অথচ জানেন না, তা কি হয়? শুধু আমাকে জানান না বা ভুলে যান! গানের স্রষ্টার পরিচয় থাকুক বা 'লোকগান' হোক, চলছে তো! হ্যাঁ অবশ্যই, আমিও একজন লোক তো বটেই (ছোটলোক, ভদ্রলোক যাই হই)! তবে এই লোকটাই এই 'সুজন' গানটির রচয়িতা, মানে কথা এবং সুর দুটোই এই লোকটার।’
একই সঙ্গে এদিন তিনি গানের জন্মের বিষয়ে ইতিবৃত্ত জানান। তাঁর পোস্ট অনুযায়ী, '৯৩ সালের কোনও এক সন্ধ্যাবেলা গড়ফার ভাড়া বাড়িতে খাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে, থুতনিতে হাত গুঁজে, সুরটা গুনগুন করছিলাম আর টুকুস টুকুস করে ডায়েরির পাতায় তাল দিচ্ছিলাম! আর কথাগুলো এলেই লিখে ফেলছিলাম চটপট! ঠিক এইভাবে গানটার জন্ম জানেন? আর আমার লেখা ও সুর করা এমন বেশ কিছু গানকে সম্বল করেই এর পরবর্তীকালে পরশপাথরের জন্ম হয়'।
অনেকেই তাঁর পোস্টে মতামত জানিয়েছেন। তবে কেবল অনিন্দ্য নন, কিছুদিন আগে শিলাজিতও তাঁর লাল মাটির সরানে গানটির বিষয়ে একই অভিযোগ করেছিলেন।