ছোটপর্দার অন্যতম পরিচিত মুখ হলেন শ্রীপর্ণা রায়। তাঁকে একাধিক জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিকে এর আগে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে আছে আঁচল, ওম নমঃ শিবায়, ইত্যাদি। তাঁকে শেষবার কড়িখেলা ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছিল পারমিতার চরিত্রে। অভিনেত্রী জানান তিনি অভিনয় অন্তঃপ্রাণ। ছোট থেকেই নাকি তিনি অভিনয় ছাড়া কিছুই চিনতেন বা জানতেন নন একদম পুঁচকি বয়স থেকেই নাকি ক্যামেরার সামনে তিনি অভিনয়ের অভ্যাস করতেন। আসলে ছোট থেকেই তাঁর অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেটাকে তিনি মনে কেবল লালন করে রাখেননি, নিজেকে তার জন্য প্রস্তুত করেছেন।
তবে তিনি যতই অভিনয় ভালোবাসুন না কেন পরিবারের তরফে শর্ত দেওয়া হয়েছিল লেখা পড়া আগে শেষ করতে হবে। এরপর তিনি উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার পরই অভিনয় জগতে চলে আসেন। শুরু করেন কাজ। যদিও তাঁর মা বাবা মোটেই চাননি যে তিনি বাইরে গিয়ে কাজ করুন। কিন্তু অভিনেত্রী মোটেই বাড়ি থাকতে চাননি। তিনি আশঙ্কা করছিলেন যে তাঁকে হয়তো এবার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে, তখন তিনি আর অভিনেত্রী হতে পারবেন না। তাই কাউকে না জানিয়েই, স্রেফ নিজের চেষ্টায় অডিশন দেন।
অডিশন দেওয়ার পর তিনি নির্বাচিতও হয়ে যান ২০০-৩০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে। জানান তিনি ১৮ কেন ২৪ ঘণ্টাই কাজ করতে রাজি আছেন। এরপর নিজের সবটুকু উজাড় করে কাজ শুরু করেন অভিনেত্রী। কিন্তু এ হেন অভিনেত্রীকেই নাকি সিরিয়াল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল! বলা হয়েছিল তাঁকে দিয়ে নাকি আর টিআরপি উঠছে না! এমনটাই তিনি একটি শোতে এসে জানান।
কেবল কি এটুকুই? অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন যাঁরা এই বিনোদন জগতের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের জীবন নাকি ভীষণ কঠিন। তিনি জানান, একসময় তাঁর মা যখন অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তখন নাকি তাঁকে শ্যুটিংয়ে যেতে হতো। মেকআপ করতে শট দিতে হয়তো। চিত্রনাট্য হাতে নিয়েই তিনি নাকি হাসপাতালে যেতেন মাকে দেখতে। মা আর বেশিদিন নেই জেনেও তাঁকে পর্দায় হাসি, মজা করতে হয়েছিল।
অন্যদিকে তাঁকে যখন ধারাবাহিক থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তখনও নাকি তাঁকে অনেক টিপ্পনি শুনতে হয়, লোকের ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়। দর্শকরা নাকি তাঁকে প্রশ্ন করতেন যে তাঁকে আবার কবে দেখা যাবে, কবে কাজ পাবেন তিনি এসব বলে। ফলে অভিনেত্রী হয়ে ওঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি সেটা বাস্তব করা যে মোটেই সহজ কাজ ছিল না সেটাই তিনি নিজের মুখে এই টক শোতে জানান।