মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের ‘বালিকা বধূ’, 'পরিণীতা' দারুণ সাড়া ফেলে। পর্দার মিষ্টি মেয়ে মৌসুমী মন জিতেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের। তার পরে তাঁকেই ছেলে জয়ন্তর বউ করে আনার সিদ্ধান্ত নেন কিংবদন্তি শিল্পী। বাড়ির বউমা সিনেমায় কাজ করবে না, এমন রক্ষণশীলতা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ছিল না। মেয়ের মতোই মৌসুমীকে আগলে ছিলেন তিনি।
ইন্ডিয়ান আইডলের আসন্ন এপিসোডে শ্বশুর-বউমার এই অজানা রসায়নের নানান দিক উঠে আসবে। ইন্ডিয়ান আইডল ১৪-র নতুন এপিসোডে প্রতিযোগিরা শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবে বাংলা তথা ভারতের গর্ব, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে। উপস্থিত থাকবেন তাঁর বউমা মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রচার ঝলক সামনে আনল সোনি টিভি।
শুরুতেই শ্রেয়া ঘোষালকে বলতে শোনা গেল, ‘আমরা আজ হেমন্তদাকে সেলিব্রেট করছি। ওঁনার আমি বিরাট ফ্যান, ওঁনাকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি। ভারতীয় সিনেমা এবং মিউজিকে হেমন্তদার অবদান ভোলবার নয়, অবিস্মরণীয়’। শ্রেয়ার কথা শুনে ইমোশন্যাল মৌসুমী। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘যদি উনি এইগুলো দেখতে পেতেন-জানতে পারতেন, আমার শ্বশুরমশাই খুব খুশি হতেন’।
প্রাণখোলা স্বভাবের জন্য সকলেই চেনেন মৌসুমীকে। মশকরা করার সুযোগ হাতছাড়া করেন না তিনি। বিশাল দাদলানিকে বলতে শোনা গেল, তিনি মৌসুমীর বিরাট ভক্ত। একথা শুনে বিশালের সঙ্গে ঠাট্টা করে মৌসুমীকে বলতে শোনা গেল, ‘তোমার পছন্দ খুব সুন্দর। সত্যি বলছি, তোমার টেস্ট খুব ভালো’। গানে গানেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাবেন বাংলার মেয়ে অনন্যা পাল।
হেমন্তের সুরে নাগিন ছবিতে ‘মেরা দিল ইয়ে পুকারে আজা’ গেয়েছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। সেই গান এদিন গাইলেন অনন্যা। বাঙালি কন্যের দরদ ভরা কন্ঠ নিমেষেই মন জিতে নেন মৌসুমীর। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘আজ আমি আমার শ্বশুরমশাইকে খুব খুব মিস করছি…’।
মৌসুমী যেমন মিশুকে স্বভাবের, তেমনই ঠোঁট কাটাও। নিজের মুখেই জানালেন, জীবনে কখনও স্ট্রাগল করতে হয়নি তাঁকে। অভিনয় সফরটা তাঁর কাছে খুব সহজ ছিল।
বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে শেষবার পিকু ছবিতে দেখা গিয়েছিল। সুজিত সরকারের এই ছবিটি ২০১৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল। ১৯৬৭ সালে তরুণ মজুমদারের ‘বালিকা বধূ’র হাত ধরে বাংলা সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ তাঁর। মৌসুমী চ্যাটার্জির কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে অনুরাগ (১৯৭২), রোটি কাপড়া অর মকান (১৯৭৪), মঞ্জিল (১৯৭৯), আঙ্গুর (১৯৮২), এবং ঘর এক মন্দির (১৯৮৪)। তিনি ২০১৫ সালে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।