মায়ের পথে হেঁটে অভিনয়কেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন কঙ্কনা সেনশর্মা। শুধু সু-অভিনেত্রী নন, অপর্ণার মতোই দক্ষ পরিচালক ‘ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’ খ্যাত এই ফিল্মমেকার তার প্রমাণ পেয়েছে গোটা দেশ। বলিউডে ভিন্ন ধারার ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি মেইন স্ট্রিম ছবিতেও দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন কঙ্কনা। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের জন্য ‘লাস্ট স্টোরিজ ২’-এর একটি কাহানি পরিচালনা করেছেন অপর্ণা-কন্যা।
১৯৭৯ সালে জন্ম অপর্ণা সেন এবং সাহিত্যিক তথা সাংবাদিক মুকুল শর্মার কন্যার। মাত্র চার বছর বয়সই শিশুশিল্পী হিসাবে অভিনয়ে হাতেখড়ি তাঁর। ছবির নাম ‘ইন্দিরা’। কেরিয়ার সামলানোর পাশাপাশি মেয়েকে সময় দিতে ভোলেননি অপর্ণা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মায়ের পেরেন্টিং টিপস শেয়ার করে নিয়েছেন কঙ্কনা। অভিনেত্রীর কথায়, ছেলেবেলা থেকে অপর্ণা সেন কোনওদিনই তাঁকে মেইনস্ট্রিম হিন্দি বা বাংলা ছবি দেখতে দেননি। ছবি দেখা তো দূরে থাক ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’-এর মহাকাব্য নিয়ে তৈরি টিভি সিরিজ বা ছবিও দেখবার অনুমতি ছিল তাঁর। ফিল্ম কম্পানিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কঙ্কনা বলেন, ‘আমাকে মা হিন্দি বা বাংলা কোনও ছবিই দেখতে দিত না। রামায়ণ বা মহাভারতও পর্দায় দেখতে দেয়নি। মা বলেছিলেন, মহাকাব্যগুলি আগে আমার পড়া উচিত’। আসলে সিরিয়াল বা সিনেমায় অন্য কারও কল্পনার প্রতিফলন ধরা পড়ে। এতে শিশুমনের কল্পনাশক্তি বাড়ে না। তাই আগে বিষয়টি পড়ে নিজেকে কল্পনা করতে বলেছিলেন অপর্ণা।'
কঙ্কনা অবশ্য জানান, ‘কয়েকটি ছবি আমি দেখেছিলাম। যেমন, মিস্টার ইন্ডিয়া বা মাসুম। তবে আমেরিকান সোপ অপেরা মানে দ্য বোল্ড অ্যান্ড দ্য বিউটিফুল বা সান্টা বারবারা আমাকে দেখতে দেয়নি মা।’
একটা সময় নিজেকে শুধুমাত্র ভারতীয় সাহিত্যের গণ্ডিতে আটকে রেখেছিলেন কঙ্কনা। কিন্তু মায়ের উৎসাহে আন্তর্জাতিক বই পড়া শুরু করেন। কঙ্কনা অকপটে স্বীকার করে নেন বাধ্য মেয়ে ছিলেন তিনি। আর মায়ের পরামর্শ মেনে লাভবান হয়েছেন তিনি।
একা মা কঙ্কনা নিজের ছেলেকেও বড় করছেন মায়ের থেকে পাওয়া আদর্শকে অনুসরণ করেই। ২০১০ সালে অভিনেতা রণবীর শোরেকে বিয়ে করেছিলেন কঙ্কনা। পরের বছরই মা হন তিনি। ছেলের বয়স যখন চার বছর, আলাদা হওয়ার ঘোষণা করেন রণবীর-কঙ্কনা। ২০২০ সালে তাঁদের ডিভোর্স প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়। বিয়ে ভাঙলেও আজও বন্ধু তাঁরা। পরস্পরের শিল্পসত্ত্বাকে সম্মান জানাতে ভোলেন না প্রাক্তন জুটি। পরিচালক কঙ্কনার ডেবিউ ছবিতে অভিনয়ও করেছেন রণবীর শোরে।