প্রতিযোগিতার বাজারে ব্যবসা বাড়াতে অন্য উপায় বেছে নিয়েছে কেবল সংস্থাগুলি। তাঁদের চ্যানেলের প্যাকেজ যেভাবে সাজিয়েছে তাঁরা তার ফলে টিভি দেখার খরচ এখন অনেকটাই কমছে। আপাতত এই সুবিধা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে কেবল সংস্থাগুলির একাংশ। করোনার জেরে বেশিরভাগ মানুষ গৃহবন্দি। ফলে কেবল প্যাকেজের খরচ কমায় খুশি অনেকেই।
অন্যদিকে ডাইরেক্ট টু হোম বা ডিটিএইচ পরিষেবা ছেড়ে যাঁরা কেবল টিভির গ্রাহক হতে চান, তাঁদের জন্যও বিভিন্ন ‘অফার’ চালু করছে একাধিক কেবল সংস্থা। নতুন সংযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোথাও প্রাথমিক বা বড় খরচের পুরোটাই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও এক মাসের কেবল খরচ নেওয়া হচ্ছে না। আবার গ্রাহক বাড়াতে কোথাও এই দু’টি সুবিধাই একসঙ্গে দেওয়া হচ্ছে।
কেবল সংস্থাগুলির খরচ কমানোর পথে হাঁটার কারণ কী? সূত্রের খবর, ডিটিএইচ সংস্থাগুলির মার্কেটিং দিন দিন বাড়ছিল। টিভি দেখার মাসিক প্যাকেজ তুলনামূলক কমিয়ে বাজার হাতের মুঠোর রাখতে চেয়ছে একাধিক ডিটিএইচ সংস্থা। তাদের টক্কর দিতেই এবার দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেবল সংস্থাগুলি।
এরাজ্যের অন্যতম কেবল সংস্থা জিটিপিএল-কেসিবিপিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিজয় আগরওয়ালের কথায়, তাঁরা এমনভাবে প্যাকেজগুলো সাজিয়েছেন, তাতে গ্রাহকদের অনেকটা আর্থিক সুরাহা হবে। ‘যাঁরা ডিটিএইচ সংযোগ নিয়েছিলেন, তাঁরা আমাদের প্যাকেজের রেট দেখলে আমাদের গ্রাহক হতে চাইবেন’। যাঁরা ডিটিএইচ সংযোগ নিয়েছিলেন, তাঁরা কেবলের প্যাকেজের রেট দেখলে কেবল গ্রাহক হতে চাইবেন বলে তিনি মনে করেন।
সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের কতটা সুবিধে হতে পারে? সংস্থার কর্তারা উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, আগে একটি প্যাকেজের ৪৬০ টাকার ছিল, সেটা এখন ৪০০ টাকা হয়েছে। আগে ২৯৫ টাকায় এসডি চ্যানেল প্যাক পেতেন গ্রাহক। এখন তাঁরা এইচডি প্যাকেজ পাবেন ওই একই দামে। অথচ আগে ৪০০ টাকার নীচে কোনও এইচডি প্যাকেজই ছিল না। ১৮৫ টাকার প্যাকেজটিকে ১৯৫ টাকা করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে জনপ্রিয় চ্যানেল বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এই প্যাকেজের জন্য বিরাট সংখ্যক গ্রাহককে ৩০০ টাকা বা তারও বেশি খরচ করতে হতো আগে। এখন সবচেয়ে কম দামের প্যাকেজেও আন্তর্জাতিক খেলা দেখতে পারবেন গ্রাহকেরা। যেই সুযোগ আগে ছিল না।
সিটি কেবলের কর্ণধার সুরেশ শেঠিয়ার কথায়, সরাসরি চ্যানেলের দাম কমানোর পথে তাঁরা হাঁটেননি। কিন্তু যাঁরা যে প্যাকেজে টিভি দেখেন, তাঁরা আরও বেশি সংখ্যক চ্যানেল পাবেন। তাঁর কথায়, সোনি, স্টার বা জি’য়ের যে চ্যানেলগুলির চাহিদা সব সময় বেশি। কম দামের প্যাকেজে সেগুলোর অনেকগুলোই এতদিন রাখা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে দর্শক সেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেখতে পাবেন। সিটি কেবলে প্যাকেজগুলোর ক্ষেত্রে প্রচুর খবরের চ্যানেল, স্পোর্টস এবং কার্টুন চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে।
সুরেশ শেঠিয়ার কথায়, তাঁরা দর্শককে আরও বেশি চ্যানেলের মাধ্যমে বিনোদন দিতে চান। 'এখন চ্যানেলগুলিতে নতুন সিনেমা নেই বললেই চলে। বহু চ্যানেলেই পুরনো বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখানো হচ্ছে। নতুন করে প্যাকেজ সাজিয়ে সেই সুযোগই করে দিচ্ছি দর্শকদের।’ অন্যদিকে, কেবল অপারেটরদের একাংশও জানাচ্ছে, সংস্থাগুলি অফারের বাইরে গিয়ে নতুন গ্রাহক সংখ্য়া বাড়ানোর জন্য নিজেদের লাভের অংশ কমিয়ে বেশি করে ছাড় দিচ্ছে। যার ফলে গ্রাহকরা অনেকটাই সাশ্রয় করতে পারবে।