‘ঠাকুমা ভিটেমাটি ছাড়তে রাজি নয়, লড়াই করতে রাজি’, ইউক্রেনে আটকে ডর-এর পরিবার

গেহরাইয়া-এর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বিশেষজ্ঞ ইউক্রেনিয়ান বংশোদ্ভূত পরিচালক ডর গাইয়ের পরিবার আটকে ইউক্রেনে।

ডর গাই

ইউক্রেনিয়ান পরিচালক ডর গাই। ‘গেহরাইয়া’ ছবিতে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বিশেষজ্ঞ পরিচালক (ইন্টিমেসি ডিরেক্টর) হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এই প্রথম কোনও পূর্নদৈর্ঘ্যের ভারতীয় ছবির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়েছেন এই ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বিশেষজ্ঞ পরিচালক (ইন্টিমেসি ডিরেক্টর)। শকুন বাত্রা পরিচালিত এই ছবিতে ইউক্রেনিয়ান বংশোদ্ভূত পরিচালক ডর গাই ছিলেন এই দায়িত্বে। 

স্বামীর সঙ্গে মুম্বইতে থাকেন পরিচালক ডর গাই। তার পরিবার ফিরে গিয়েছেন ইউক্রেনে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিগত কয়ের সপ্তাহ জরুরি অবস্থা ইউক্রেনে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানিয়েছেন, এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য সে দেশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রয়েছেন। 

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-এ বাড়ি পরিচালকের। ছোট থেকে বড় হয়েছেন সেখানে। প্রায় ২২ বছর সেখানে ছিলেন। সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানিয়েছে, সেখানে পরিবার ছাড়াও বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু রয়েছে তার। তিনি তাদের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত। তিনি জানিয়েছেন, কয়েক দিন কিয়েভে আটকে থাকার পর তার বাবা-মা কিয়েভ থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। 

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার বাবা-মা বেশ কয়েকদিন ধরে কিয়েভ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারছিলেন না। কারণ ওখানে খুব যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক লোক নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। পরে আমাদের গ্রামে গিয়ে পৌঁছান তারা। যা কিয়েভ থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে।’

পরিচালক জানিয়েছেন, বছর ৭৮-এর তার ঠাকুমা ভিটে মাটি ছেড়ে যেতে রাজি ছিলেন না। বলেছিলেন, পরিবর্তে লড়াই করতে চান। ডর-এর কথায়, ‘আমার ঠাকুমা, যার বয়স ৭৮, ভিটে মাটি ছাড়তে রাজি হননি। তার পরিবর্তে বলেন, 'এখানে থেকে লড়াই কে করব? আমি লড়াই করব। আমি যেতে চাই না।' তাই, উনি আমার সৎ বাবার সঙ্গে সেখানে আছেন। আমার মা এবং ভাই মহিলা এবং শিশুদের সঙ্গে সীমান্তের ওপারে পাঠাতে গিয়েছেন। আমার ঠাকুমার সঙ্গে থাকবেন বলে ফিরছেন। আমাদের গ্রামের সঙ্গে অন্য রাস্তার সংযোগকারী ব্রিজটিতে বোমা হামলা করা হয়েছিল, তাই তারা গ্রামে প্রবেশ করতে পারেননি। তারা ইউক্রেনের মাঝখানে কোথাও আটকে আছে, কিয়েভে ফিরে যাওয়ার কোনো নিরাপদ উপায় আছে কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।'

ইউক্রেনে বড় হওয়ার পর গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুলে নাটক পরিচালনা করতে ভারতে আসেন ডর। পরিচালনায় আসার আগে তিনি মুম্বইতে চিত্রনাট্য লেখা এবং ফিল্মে প্রশংসা শিখিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে দুটি সিনেমা পরিচালনা করেছেন।