তিনি ভারতীয় ক্রিকেটের রকস্টার। তবে ‘গব্বর’ শিখর ধাওয়ানের ব্যক্তিগত জীবনে কত বড় ঝড় বয়ে গিয়েছে তা কিছুদিন আগে পর্যন্ত অনেকের জানা ছিল না। এলোমেলো শিখরের ব্যক্তিগত জীবন। বর্তমানে ভারতীয় দলে জায়গা নেই শিখরের। তবে আইপিএলে নিয়মিত তিনি।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ডিভোর্সি আয়েশা মুখোপাধ্যায়কে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন শিখর। তাঁদের একমাত্র পুত্র জোরাভার। ব্যাপক আইনি ঝামেলার পর দু-মাস আগেই আয়েশা-শিখরের ডিভোর্স চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু ছেলের থেকে আলাদা পাঞ্জাব সুপার কিংসের অধিনায়ক। দু-দিন আগেই জোরাভারের জন্মদিনে শিখরের হৃদয় নিংড়ানো পোস্ট দেখে চোখের কোণ ভিজেছে নেটিজেনদের। একই হাল অক্ষয় কুমারের। শিখরের সেই কান্নাভেজা পোস্ট দেখে স্থির থাকতে পারেননি খিলাড়ি কুমার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শিখেরর জন্য মন ছোঁয়া পোস্ট আক্কির। শিখরের পোস্ট ইনস্টা স্টোরিতে শেয়ার করে অক্ষয় লেখেন, ‘এই পোস্টটা দেখে সত্যি আবেগঘন হয়ে পড়লাম। বাবা হিসাবে আমি জানি, সন্তানকে দেখতে না পাওয়া বা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করতে পারার চেয়ে বেশি কষ্টের আর কিছু হয় না। মনে সাহস রাখ শিখর… কোটি কোটি মানুষ তোমার জন্য প্রার্থনা করছে, শীঘ্রই তুই ছেলের দেখা পাবি। ভগবান তোমার মঙ্গল করুন’।

শিখরের পাশে অক্ষয়
হ্যাঁ, প্রায় এক বছর ধরে তাঁর ছেলে জোরাভারের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করতে পারছেন না। এমন কী ইনস্টাগ্রামে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট করে শিখর দাবি করেছেন যে, তাঁকে সমস্ত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম থেকেও ব্লক করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
শিখর ধাওয়ান ছেলের উদ্দেশে খোলা চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘আমি তোমাকে দেখেছি এক বছর পার হয়ে গিয়েছে। এবং এখন প্রায় তিন মাস ধরে আমাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করা হয়েছে, তাই একই ছবি পোস্ট করছি। আমার ছেলে, তোমাকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা।’
তিনি আরও লেখেন, ‘যদিও আমি সরাসরি তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি, তবে আমি টেলিপ্যাথির মাধ্যমে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকি। আমি তোমার জন্য খুব গর্বিত, এবং আমি জানি তুমি খুব ভালো আছো এবং সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠছো। বাবা সব সময়ে তোমাকে মিস করে এবং তোমাকে খুব ভালবাসে। আমি সব সময়ে হাসি মুখে সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি, যখন আমরা ঈশ্বরের কৃপায় আবার দেখা করব। দুষ্টুমি করো, কিন্তু ধ্বংসাত্মক হয়ে যেও না। একজন দাতা হয়ে ওঠো। নম্র, সহানুভূতিশীল, ধৈর্যশীল এবং শক্তিশালী একজন মানুষ হয়ে ওঠো। তোমার সঙ্গে দেখা না হলেও তোমাকে রোজ মেসেজ করি। তুমি ভালো আছ কিনা সেই খোঁজখবর নিই। আমি কী করছি, সেই কথাও জানাই। কিন্তু তুমি সে সব দেখতে পাও না। তোমার বাবা তোমাকে খুব ভালবাসে।’
এই বছরের অক্টোবরে দিল্লির একটি আদালতে শিখর ধাওয়ান আর আয়েশার ডিভোর্সে সিলমোহর দেয়। সরাসরি কোর্টে হাজির হননি আয়েশা। আদালত এও জানায়, স্ত্রীর নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন শিখর। ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ায় নিজের ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য শিখর ধাওয়ানকে বাধ্যতামূলক অধিকারও দিয়েছে আদালত। এর পাশাপাশি জোরাভারকে ভারতে আনার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু শিখর ধাওয়ান যে কোনও ভাবেই ছেলের সঙ্গে যোগযোগ করে উঠতে পারছেন না, তা স্পষ্ট শিখরের ইনস্টা পোস্টে।
দুই সন্তানের জননীর প্রেমে পড়েছিলেন শিখর ধাওয়ান। সেই প্রেমকে পরিণতিও দেন তিনি। ২০১২ সালে আয়েশার সঙ্গে সাতপাকে বাধা পড়েন শিখর। দু-বছর পর জোরাভারের জন্ম হয়। কিন্তু ক্রমেই তিক্ততা আসে শিখর-আয়েশার সম্পর্কে। উল্লেখ্য, আয়েশা ২০২১ সালে সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ তাঁর ও শিখর ধাওয়ানের বিবাহবিচ্ছেদের কথা সকলকে জানান।