বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৯৭। গত মঙ্গলবার ১৪ ডিসেম্বর ৯৭তম জন্মবার্ষিকী ছিল ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব রাজ কাপুরের। ১৯২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মেছিলেন তিনি। রাজ কাপুর একজন দুর্দান্ত অভিনেতার পাশাপাশি একজন সফল পরিচালক এবং প্রযোজকও ছিলেন। নারীমহলেও যে দুর্দান্ত জনপ্রিয় ছিলেন রাজ সেকথাও অজানা নয়। তবে বলিপাড়ায় পা রাখার বহু আগে থেকেই নারীদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল দেখার মতো। একথা জানিয়েছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা তথা রাজ কাপুরের কলেজ জীবনের বন্ধু দিলীপ কুমার স্বয়ং। নিজের আত্মজীবনীতেই প্রিয় বন্ধু রাজের ব্যাপারে দিলীপ কুমার বলেছেন, বরাবরই নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্ষুরধার বাগ্মীতার সুবাদে নারীমহলে দারুণ জনপ্রিয় ছিল রাজ। এই ব্যক্তিত্ব রাজ কাপুরের সহজাত ছিল বলেই জানিয়েছিলেন 'দিলীপ সাব'।
এখানেই না থেমে নিজের আত্মজীবনীতে দিলীপ কুমার আরও বলেছিলেন, " নীল রঙা চোখের সঙ্গে রাজ্যের ছিল ওরকম দুষ্টুমিষ্টি ব্যবহার, ফলে মেয়েরা যে ওঁর প্রতি আকৃষ্ট হবে এ আর নতুন কী। সেই তুলনায় আমি বেশ চুপচাপই থাকতাম। রাজ দারুণ সুন্দর কথা বলতে পারত আর আমি ছিলাম উল্টোটা, যাকে বলে চুপচাপ। আমি অবাক হয়ে দেখতাম কী দারুণ আর সুচারুভাবে মেয়েদের সঙ্গে কত সহজে মিশে যেতে পারত ও। 'চার্মিং পার্সোন্যালিটি' যাকে বলে, ওঁর তাই ছিল"।
বইতে এক অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করেছিলেন 'মুঘল-এ-আজম' এর নায়ক। "একবার রাজের সঙ্গে ছি। আচমকা হেঁটে যাওয়া দুই পার্সি মেয়েকে লিফ্ট দিল রাজ। আমি কোনওরকমে চেপেচুপে আমার পাশের মেয়েটির জন্য সুবিধেজনক বসার জায়গা করে দিলাম। ওদিকে রাজ কিন্তু সেসবের ধারেপাশে মাড়াল না। সামান্য সরে নিজের পাশে সেই দু'জনের মধ্যে একজনকে বসতে দিল। ব্যাস, গল্প শুরু করে দিল। কিছুক্ষণ পর দেখি সেই সুন্দরীর কাঁধে হাত রেখে খোশমেজাজে আড্ডা মার্চে ও। দেখে তখন কে বলবে কিছুক্ষণ আগেই ওঁদের আলাপ হয়েছে। দেখে তো তখন টেনশনে দুরুদুরু বুক কাঁপছে আমার। পরে বুঝেছিলাম মেয়েদের সঙ্গে আমাকে 'কমফোর্ট জোন'-য়ে নিয়ে আসার জন্যই তা করেছিল ও। তবে হ্যাঁ, কোনও মেয়ের সঙ্গে কখনওই কোনও অসভ্যতামি ও কোনওদিনই করেনি। ও স্রেফ দুষ্টু ছিল। এটুকুই'।