প্রবীর রায়চৌধুরীর ম্যাজিক আবারও ফিরে এসেছেন। পর্দায় ম্যাজিক দেখাচ্ছেন তিনি। তাঁর উইটি সংলাপ আবার জোর আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভক্তদের মধ্যে। কী বলছি, কার কথা বলছি? সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত দশম অবতার ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রের কথা বলছি। এই ছবিটি আদতে ডাবল প্রিক্যুয়েল। এখানে ২২ এ শ্রাবণ এবং ভিঞ্চি দা ছবির প্রাককথন দেখানো হয়েছে। বলা যায় এটাই বাংলার প্রথম কপ ইউনিভার্স। এখানে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যেমন প্রবীর রায়চৌধুরী হয়ে ধরা দিয়েছেন তেমনই অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে বিজয় পোদ্দার হিসেবে দেখা গিয়েছে।
দশম অবতারে বাংলার প্রথম কপ ইউনিভার্স দেখা গেল। এটার বুদ্ধি কি প্রসেনজিতই সৃজিতকে দিয়েছিলেন? হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানালেন, 'না, এটা ঠিক আমার আইডিয়া নয়। কিন্তু দর্শক আমার চরিত্রটা ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে। তাই তাঁরাই দাবি করেছিল এটাকে ফেরানোর জন্য। আমিই তখন সৃজিতকে বলি প্রবীরের মতো আরও একটা চরিত্র বানাতে, ওই চরিত্রটা বলিনি কারণ সেটা তো ২২ এ শ্রাবণে মরে গিয়েছে। তবে সৃজিত সেটা না করে গল্পটাকে ১১ বছর পিছিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে ২২ এ শ্রাবণ এবং ভিঞ্চি দার প্রিক্যুয়েল উঠে আসে। তবে এই প্রিক্যুয়েল ভাবনাটা বাংলা ছবির ক্ষেত্রে প্রথম।'
বাংলার কপ ইউনিভার্স এল সৃজিতের হাত ধরে, অন্যদিকে বলিউডে কপ ইউনিভার্স বানিয়ে নজর কেড়েছেন রোহিত শেট্টি। দুটো আলাদা কোথায়? প্রসেনজিতের কথায়, 'দুটোর দুনিয়াটাই আলাদা। একজন পুলিশ যদি মাইলের পর মাইল দৌড়ায় সে হাঁপাবেই। সেটাই সৃজিত তার ছবিতে দেখিয়েছে। আমাদের চরিত্রগুলো আমার শহরের পুলিশের মতোই। ওঁরা একটা আলাদা জগতে বাঁচে। কিন্তু ওঁদের জীবনেও রাগ দুঃখ আছে। কিন্তু তারপরেও তাঁরা তাঁদের কাজটা করে চলে। অন্যদিকে রোহিত শেট্টির কপ ইউনিভার্সের দুনিয়াটা অনেক বড়। তাঁর ছবির মতো সৃজিতের ছবিতে ধুলো বা গাড়ি কিছুই ওড়ে না।'
আরও পড়ুন: ৬১-এ পা প্রসেনজিতের! টলিউডের চিরসবুজ পোস্টার বয়ের ফিট থাকার গোপন মন্ত্র জানেন?
আরও পড়ুন: 'আমি ফ্রি বার্ড, যা মনে হয় তাই করি...' রাজনীতি ভার্সেস অভিনয় কোনটা জরুরি মিমির কাছে?
কেবল বাংলায় নয় হিন্দিতেও দারুণ কাজ করে চলেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। স্কুপ এবং জুবিলির পর তাঁকে আবার কোথায় দেখা যাবে? এই প্রসঙ্গে অভিনেতা জানান, 'আসলে ব্যাপারটা হিন্দি প্রজেক্ট বাছার নয়। আমার ৪০ বছরের কেরিয়ারে আমি আঁধিয়া করেছিলাম ডেভিড ধাওয়ান, দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তারপর বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের সঙ্গে জুবিলি আর হংসল মেহতার সঙ্গে স্কুপে কাজ করি। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে আমায় সেখানে যেতে হয়েছিল কিছু করার জন্য। লোকজন আমার কাছে আসেন, তাঁরা যখন বোঝেন আমার জন্য কোনও চরিত্র আছে তখন তাঁরা আমার কাছে আসেন। বিশেষ করে যখন একটু আলাদা ধরনের চরিত্র থাকে।' তিনি আরও বলেন, 'আমি যদি এখন বলিউডে কিছু করি সেটাকে শক্তিশালী চরিত্র হতে হবে। যা খুশি চরিত্র এলেই করব না। সেটাকে একটা শক্তিশালী চরিত্র হতেই হবে। সেখানে দেখাতে হবে গত ৪০ বছরে আমি কী কী শিখেছি।'
প্রসেনজিৎ নিজেই একটা সময় বলেছিলেন যে বলিউড নাকি আঞ্চলিক অভিনেতাদের কাজ দেয় না। সেটা কি বদলেছে? উত্তরে অভিনেতা বলেন, 'ব্যাপারটা এরম একদমই না যে ওঁরা আমাদের কাজ দেন না। আমরাও সেখানে গিয়ে কাজের খোঁজ করি না। আমি তখন সেই সাক্ষাৎকারে বলতে চেয়েছিলাম যে একটা সময় ছিল যখন বাঙালি অভিনেতা হিসেবে আমরা জানতাম না যে মারাঠি অভিনেতারা সেখানে কী কাজ করছেন। এমনকি পঞ্জাব, তামিল বা মালায়লি ছবির ক্ষেত্রেও। সেখানে ট্যালেন্ট থাকতেই পারে। এখন আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখক, অভিনেতাদের উঠে আসতে দেখা যাচ্ছে। সেটা হচ্ছে ওটিটির দৌলতে। নতুন প্রজন্মের জন্যই এটা হচ্ছে। এটা একটা দারুণ এক্সপোজার, সুযোগও অনেক বেশি।'