বলিউড থেকে টলিউডে আছড়ে পড়েছে বয়কট ট্রেন্ড। রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘ধর্মযুদ্ধ’ ছবির বিরুদ্ধে দিন কয়েক আগে বয়কট রব উঠেছিল, এবার নেটদুনিয়ার একাংশের প্রশ্নের মুখে পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের ‘বিসমিল্লা’। জন্মাষ্টমীরদিন মুক্তি পেয়েছে এই ছবি।
সানাই আর বাঁশির সুর মিলে মিশে একাকার এই ছবিতে। প্রেমের কথা বলে ‘কেদারা’ পরিচালকের নতুন ছবি, যেন বিসমিল্লা (ঋদ্ধি) ও ফাতিমার (শুভশ্রী) কৃষ্ণ ও রাধা হয়ে ওঠার আখ্যান এই ছবিতে ধরা পড়েছে।
ফেসবুক জুড়ে প্রশ্ন, এই ছবি তৈরি হয়েছে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে তোষণ করে। শুভদীপ সেন নামে এক জনৈক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, টলিউড যখন বলছে বিসমিল্লা, দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্ম জগৎ তখন বলছে বন্দেমাতরম’। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই রাম কমল মুখোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন তাঁর নতুন ছবি ‘১৭৭০’। যে ছবির প্রেক্ষাপট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘আনন্দমঠ’। ‘বাহুবলী’, ‘আরআরআর’ ছবির চিত্রনাট্যকার ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ এই ছবির চিত্রনাট্য লিখছেন। পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন এস এস রাজমৌলীর সহকারী অশ্বিন গঙ্গারাজু। দক্ষিণ যখন বাংলার ঐতিহ্য আর ইতিহাসকে গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকদের কাছে অবহেলিত বাংলা?
এই প্রসঙ্গে ওই জনৈক লেখেন, ‘এক হাতে গীতা আর এক হাতে তলোয়ার নিয়ে স্বাধীনতার শপথ নেইয়া বাঙালি, বন্দেমাতরম মন্ত্রে দীক্ষিত বাঙালি… বলে কিনা ‘বলতেই হবে বিসমিল্লা’। এই পোস্টের সঙ্গে ‘১৭৭০’-এর পোস্টার এবং ঋদ্ধি সেনের একটি পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন শুভদীপ। ‘বিসমিল্লা’ ছবির প্রচারমূলক পোস্টে ঋদ্ধি লিখেছেন, ‘যত ভাঙন তুলে নিক এ মন, বলতেই হবে বিসমিল্লা’। এই নিয়েই আপত্তি নেটিজেনদের একাংশের। তাঁরা বলছেন, ‘বাঙালি এখন আর বন্দেমাতরম শব্দটা মুখে আনে না। বিসমিল্লা শব্দই রোম্য়ান্টিক বেশি’।
এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ‘বিসমিল্লা’ ঋদ্ধি সেন জানান, ‘এটা (বয়কট) এখন কারেন্ট ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘লাল সিং চাড্ডা ‘ থেকে শুরু হয়েছে এই ট্রেন্ড। তারপর এখানে ‘ধর্মযুদ্ধ’ দিয়ে শুরু হল, এখন ‘বিসমিল্লাহ’ রিলিজ হওয়ার পরই রাতারাতি এই নিয়েও শুরু হয়ে গেল। আমাদের দেশের মানচিত্র বদলে দেওয়ার জন্য, আমাদের মিলনের ইতিহাস বদলে দেওয়ার জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চলছে। এই পোস্টে যে যে কমেন্ট দেখলাম, সেটা ভালো করে দেখলে বোঝা যাচ্ছে, এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া নয়। যে যে প্রোফাইল থেকে কমেন্টগুলো আসছে, সেই সবকটাই ফেক প্রোফাইল।'
এগুলো নির্দিষ্ট আইটি সেলের কাজ বলেই বিশ্বাস ঋদ্ধির। অন্যদিকে ছবির পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত বললেন, ‘আমি কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত। রোজ গুরুমন্ত্র জপ করি। এরপরেও যদি মানুষের কিছু বলার থাকে, বলুক’।