মমতা শঙ্করের ‘শাড়ির-আঁচল’ মন্তব্য ঘিরে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। আধুনিক নারীর পোশাক নিয়ে নিজের মতামত রাখতে গিয়ে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বেশকিছু বক্তব্য পেশ করেন। সেই নিয়েই দানা বাঁধে বিতর্ক। টলিপাড়ার কেউ কেউ মমদির পাশে দাঁড়িয়েছেন, অনেকে আবার বিপক্ষে মতামত রেখেছেন। এবার মমতা শঙ্করের সমর্থনে সুর চড়ালেন রূপা, শুধু তাই নয় দলের বিরাগভাজন হতেও আপত্তি নেই জোর গলায় জানালেন সেকথা।
কী ঘটেছে? মমতা শঙ্করের বক্তব্য ঘিরে তাঁকে নিশানা করে বক্তব্য রাখেন বিজেপি নেত্রী রাখি মিত্র। তা সহ্য় করতে পারেননি রূপা। শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে তাঁকে কড়া ভাষায় পালটা আক্রমণ করেন বিজেপি নেত্রী রূপা। অশ্লীল শব্দও ব্যবহার করে বসেন দলীয় সহকর্মীর বিরুদ্ধে।
রূপাকে বলতে শোনা গেল, ‘অসভ্য, অশিক্ষিত, অপদার্থ মহিলা যার নিজের জীবনে কিচ্ছু হয়নি। আগে মমতা শঙ্করের পায়ের তলায় নখের যোগ্য হয়। তারপর কথা বল, ইডিয়ট মহিলা একটা। তোর সাহস কী করে হয় মমতা শঙ্করকে নিয়ে কথা বলার? তোর পরিচিতি কী রাখি মিত্র? পারবি মমতা শঙ্কর হতে? তোর বিজেপির পিছন ধরে কিছু হয়নি। উনি নিজের ক্ষমতায় মমতা শঙ্কর হয়েছেন। নিজের ক্ষমতায় কোথাউ দাঁড়াবি সেদিন কথা বলবি রাখি মিত্র। অসভ্য, অপদার্থ।’
রূপা যোগ করেন, 'পিছনে চারটে পার্টির পতাকা লাগিয়ে কথা বলা, সাহস কী করে হয়? ফ্রি-তে সোশ্যাল মিডিয়ায়, নিজের ফেসবুক মনিটারাইজ করে টাকা রোজগারের পদ্ধতি। এটা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র অর্থ রোজগারের পদ্ধতি। সারা জীবনে মমতা শঙ্কর যা করে দেখিয়েছে, সেটা আগে করে দেখা।'
রাখিকে তাঁর পালটা প্রশ্ন, 'তোমাদের মতো অপদার্থ, কুলাঙ্গারদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির এই দুর্দশা। এত আস্পর্ধা হয় কী ভাবে রাখি মিত্রের। মমতা শঙ্করকে নিয়ে এত বড় কথা বলার অধিকার কোথায় পেলে? এত বড় দুঃসাহস মমতা শঙ্কর সমন্ধে বাজে বাজে কথা বল! কী হবে তোমাদের মতো কুলাঙ্গারদের? পশ্চিমবঙ্গে কটা লোক জন্মেছে ওর মতো? বাঁদরের বাচ্চা কয়েকটা, রাজনীতির মোড়কে বাঁচা বদমাইশের বাচ্চা। মমতা শঙ্কর সম্পর্কে বাজে কথা বলার ক্ষমতা কার হবে এখানে? সহ্য করব না। তার জন্য আমাকে আমার পার্টি যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। মাননীয়া মমতা শঙ্কর সম্পর্কে আমি কিছু শুনতে রাজি নই।’
মমতা শঙ্করের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পারিবারিক সম্পর্ক রূপার। তিনি বলেন, 'মমতা শঙ্কর শান্তি, মার্জিত, ভদ্র একজন মহিলা। খুব সাবধানে কয়েকটা কথা বলেন। আমি তোমাদের দেখিয়ে দিচ্ছি, কোন কোন ল্যাম্পপোস্টের সামনে কোন কোন মহিলা দাঁড়িয়ে থাকে, আমি সন্ধ্যেবেলা আমি রাস্তায় ঘুরে বেড়াই। যাদের খাওয়ার হয় না, তাঁদের নিজের হাতে খাওয়ার খাওয়াই। কোনওদিন ছবি পোস্ট করিনি। ২০-২৫ বছর ধরে এই কাজ করে যাচ্ছি।'
এইরকম কতগুলো বিজেপি, টিএমসি, কংগ্রেস-- কতগুলো অপদার্থ। সেগুলো কোনওদিন সমাজের কোনও কাজ করেনি। আমি এক কোটি টাকা খরচ করেছি, শুধু গরীব মানুষগুলোকে খাওয়ার খাইয়ে।
গাল দিয়ে ভূত ভাগিয়ে দেব। আমি কাউকে কেয়ার করি না। রূপা গাঙ্গুলি বলছি, ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তা বলছি। আমার মমদির সম্মন্ধে তোমরা বাজে কথা বলবে? আমি কাউকে ছাড়ব না! কোথায় মাঠে নামতে হবে আমাকে বলো, মাঠে নেমে যাব, এত দুঃসাহস?'
পাশপাশি তিনি এ-ও জানান মমতা শঙ্করের পরিবারের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। মমতা শঙ্করকে নিয়ে বেন, 'এক জন শান্ত, ভদ্র মার্জিত মহিলা খুব সাবধানে কয়েকটা কথা যদি বলেন, তাঁকে নিয়ে সমালোচনা সহ্য করবেন না রূপা।
আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মমতা শঙ্কর বলছেন, 'আমি শাড়ি পরব কিন্তু আঁচলটা জায়গা মতো থাকবে না, এটা ভাবনাটা বুঝতে পারি না। ক্ষমা করবেন, এটা বলছি বলে যাঁদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যাঁরা ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে এমন মেয়ে বলতাম, তাঁরা এইরকম ভাবে দাঁড়াত। কিংবা গ্রামে কাজ করতে গিয়ে আঁচল সরে গেল সেটা দোষের ছিল না। এঁরা মানুষকে অ্য়াট্রাক্ট করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন, এটা তাঁদের পেশা, আমি তাঁদেরও শ্রদ্ধা করছি।' এই মন্তব্য ঘিরে যাবতীয় সমালোচনা ঝড়!