৬০ বছর পরে বড় পর্দায় অপু। সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি মনে করিয়ে পর্দায় অপুর গল্প ফিরিয়ে আনছেন শুভ্রজিৎ মিত্র। অপুকে বড় পর্দায় দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন বাঙালি দর্শক। বেশ কিছু চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হলেও এখনও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি ‘অভিযাত্রিক’। ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্জুন চক্রবর্তী। অভিনেতা সব্যসাচা চক্রবর্তীর ছেলে অর্জুন। ছবিতে অপর্ণার ভূমিকায় অভিনয় করছেন দিতিপ্রিয়া রায় ও শঙ্করের চরিত্রে সব্যসাচী চক্রবর্তী প্রমুখ। বাবা-ছেলে ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন।
সদ্য এই ছবি সম্পর্কিত এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছবির পরিচালক সহ অন্যান্য কলাকুশলীরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সব্যসাচী চক্রবর্তীও। ‘অভিযাত্রিক’এ তাঁর চরিত্রের নাম শঙ্কর।
ছবিতে নিজের চরিত্র সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সব্যসাচী বলেছেন, 'আমায় যখন শুভ্রজিৎ প্রথম বলল, এই চরিত্রটার নাম শঙ্কর, তখন আমি বললাম, এই কি সেই শঙ্কর যে চাঁদের পাহাড়ে গিয়েছিল? শুভ্রজিৎ বলল, হ্যাঁ, বিভূতিভূষণের শঙ্কর। আমি বলেছিলাম, আমায় এই চরিত্রে কাস্টিং করাটা কি ঠিক হবে? কারণ শঙ্করের ভুঁড়ি হয়ে গিয়েছে এটা মানা যাচ্ছে না। শুভ্রজিৎ তখন আমায় বোঝাল, শঙ্কর দু-আড়াই বছর ধরে কিছুই করছে না। ও বেনারসে থাকে। আর ওখানে প্রচুর জিলিপি আর পেড়া খেয়েছে।'
ছবি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র বলেন, 'আমরা, বাঙালিরা সবাই অপরাজিত, অপুর সংসার পড়েছি। তবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার সমাপ্তি রয়েছে। 'অপুর সংসার' সিনেমায় আমরা শেষে দেখতে পাই, কাজল বলছে, তুমি আমার বাবাকে চেনো? তারপর প্রশ্ন করছে, তুমি কে? সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় উত্তর দেন, আমি তোমার বন্ধু। সেই বন্ধু থেকে অপুর একজন বাবা হয়ে ওঠার গল্পই বলবে 'অভিযাত্রিক'।
সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত অপু ট্রিলোজির আগের তিনটি ছবির কথা মাথায় রেখেেই এই ছবিও হয়েছে সাদা কালোতে। পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র পুরনো এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের উপন্যাস 'অপরাজিত'র শেষ ১৫০ পাতার যেভাবে গল্প পরিপূর্ণতা পায় সেই গল্পই আমি তুলে ধরেছি আমার এই ছবিতে। পিরিয়ড ফিল্ম হওয়ার কারণ বিস্তর রিসার্চ করতে হয়েছে ঠিকই এবং তার ছাপ যে আমরা ছবিতে রাখতে পেরেছি সেটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।’