বাজারের মধ্যিখানে পটল নিয়ে দামাদামিতে ব্যস্ত রূপঙ্কর, এর মাঝেই বেজে উঠল পকেটে থাকা মুঠোফোন। কোনরকমে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ সামলে ফোন ধরেই বড় চমক। তিন মাস পর ফের একই ঘটনার পুনারবৃত্তি। তবে প্রেক্ষাপট পালটে গেল, এবার অনলাইন ক্লাসে ব্যস্ত রূপঙ্কর, ফোন হাতে নিতেই কানে ভেসে এল সেই পরিচিত কন্ঠস্বর। কঠিন পরিস্থিতিতে রূপঙ্কর ও তাঁর পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে ফোন করেছিলেন সেই প্রবীণা। কে তিনি?
রূপঙ্করের কাছে আসা সেই ফোনের ওপারে যিনি থাকেন, তিনি আর কেউ নন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আর প্রবীণ এই শিল্পীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে প্রায় শিশুর মতোই উচ্ছ্বসিত তিনি, সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিজের সেই আনন্দের কথা না-জানিয়ে থাকতে পারলেন না। ফেসবুকের দেওয়ালে শিল্পী লেখেন, 'মাস তিনেক আগে একদিন সকালে একটা ফোন এলো,আমি তখন বাজারে পটলের দরে ব্যস্ত। এক প্রবীণা উত্কণ্ঠিত হয়ে আমার এবং আমার পরিবারের আর সকলের কুশল জানতে চাইলেন।আমি মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি কিনা, অপ্রয়োজনে বেরোচ্ছি কিনা ইত্যাদি।
আজ সকালে আমি অনলাইন ক্লাস করাচ্ছিলাম, আবার সেই প্রবীণা র ফোন। আবার আমার বিষয়ে জানলেন, আমার স্ত্রী ও কন্যা কেমন আছেন জানতে চাইলেন। বার বার সতর্ক করলেন যেন আমি বাড়ি থেকে না বের হই। বেরোলে যেন অন্যদের থেকে ছ ফিট দুরত্ব বজায় রাখি। আমি ওনার কুশল জানতে চাইলে উনি বললেন, 'আমার কথা ছাড়। তোমাদের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বাংলা সঙ্গীত জগৎ কে। সাবধানে থেকো।
দুটি ঘটনাতেই আমি হতচকিত হয়ে আমি কয়েক মুহুর্ত স্থানুবৎ হয়ে গেলাম। প্রবীণা আর কেউ নন। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আপনাকে আমার প্রণাম জানাই'।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ শিল্পী এহেন এমন দায়িত্বপরায়ণতায় মুগ্ধ নেটিজেনরাও। তবে রূপঙ্করই একা নন, বাংলার সংগীত জগতের কমবেশি সব নবীন শিল্পীর কাছেই যায় এই প্রবীণার ফোন। দিন কয়েক আগেই লোপামুদ্রা মিত্রর কাছেও এসেছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ফোন। ছোটদের খোঁজখবর নিয়ে নিয়ম করে যোগাযোগ রাখেন তিনি, উপরি পাওনা হিসাবে মেলে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ভালোবাসা ও আর্শীবাদ।