সোনু সুদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। করোনাকালে পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘মসিহা’র বিরুদ্ধে উঠল ২০ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগ। শনিবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে আয়কর দফতর জানাল ২০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছেন অভিনেতা ও তাঁর সহকর্মীরা। গত তিনদিন ধরে সোনু সুদের অফিস এবং বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা।
আয়কর দফতরের দাবি, সোনু সুদের এনজিও-র তরফে বিদেশে থেকে প্রায় ২.১ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, যা সরাসরি যা ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্টের সরাসরি লঙ্ঘন।
বুধবার মুম্বইয়ে সোনু সুদের দফতরে আয়কর অভিযান চালায় আয়কর দফতর, পরদিন তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। গত কয়েকদিনে অভিনেতার সঙ্গে যুক্ত মুম্বই, লখনউ, কানপুর, জয়পুর, দিল্লি এবং গুরুগ্রামের মোট ২৮টি জায়গায় একযোগে কয়েক ঘণ্টা ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছেন ইনকাম ট্যাক্স আধিকারিকরা। এই তল্লাশি চলাকালীনই অভিনেতার বিরুদ্ধে কর ফাঁকি তথ্য-প্রমাণ হাতে এসেছে আয়কর দফতরের।
আয়কর দফতর জানিয়েছে, যেই রোজগারের হিসেব সোনু সুদ লুকাতে চাইতেন, সেটা বেনামী সংস্থাদের থেকে ভুয়ো ঋণ নেওয়ার খাতে দেখানো হত। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই এই ধরণের ২০টি বেনামী লেনদেনের হদিশ পেয়েছেন, যাঁরা সেই ভুয়ো ঋণ দিয়েছেন তাঁরা জেরায় স্বীকার করে নিয়েছেন এই জালিয়াতির কথা। আরও জানিয়েছেন, তাঁরা নগদ টাকার বিনিময়ে চেক ইস্যু করেছেন। এমন ঘটনাও ঘটেছে যেখানে কর ফাঁকির উদ্দেশ্যে অর্জিত টাকা হিসাবের খাতায় ঋণ হিসাবে দেখানো হয়েছে। এইসব ভুয়ো ঋণ ব্যবহার করে সম্পত্তি কিনতে বিনিয়োগ পর্যন্ত করা হয়েছে, সেই প্রমাণও মিলেছে।
CBDT(The Central Board of Direct Taxes)-এর তরফে জানানো হয়েছে, কেবলমাত্র ১লা এপ্রিল ২০২১ থেকে এখনও পর্যন্ত, মোট ১৮.৯৪ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে সংগ্রহ করেছে সোনু সুদের সংস্থা, যার মধ্যে কেবলমাত্র ১.৯ কোটি টাকা সমাজসেবার কাজে ব্যায় হয়েছে, ফাউন্ডেশনের ব্যাঙ্ক খাতায় ১৭ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। তল্লাশির পর সোনুর অফিস থেকে নগদ ১.৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, পাশাপাশি সোনুর সংস্থার ১১টি লকার পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সিজ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন ৪৮ বছর বয়সী এই অভিনেতা। দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। এর দিন কয়েকের মধ্যেই সোনুর অফিস ও বাড়িতে হানা দেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা।