সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার তদন্তে এবার পুলিশি জেরার মুখে প্রয়াত অভিনেতার শেষ ছবি দিল বেচারার নায়িকা সঞ্জনা সাংঘি। মঙ্গলবার দুপুরে বান্দ্রা থানায় হাজির হন অভিনেত্রী। এদিন গোলাপি প্রিন্টেট সালোয়ার কামিজ,সাদা ওড়নায় পাওয়া গেল সঞ্জনাকে। সুশান্তের আত্মহত্যার তদন্তে নেমে শনিবার পর্যন্ত ২৭ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে মুম্বই পুলিশ। জেরা করা হয়েছে দিল বেচারার পরিচালক মুকেশ ছাবড়াকেও। প্রসঙ্গত শুধু দিল বেচারা'র পরিচালকই নন সুশান্তের ডেব্যিউ ছবি কাই পো ছে'র কাস্টিং ডিরেক্টরও ছিলেন মুকেশ। সুশান্তের সঙ্গে তাঁর পেশাদার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
সুশান্তের পরিবারের লোকজন ছাড়াও তাঁর চর্চিত বান্ধবী, সুশান্তের দুই ম্যানেজার, বিজনেস অ্যাটোসিয়েট সকলেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সুশান্তের ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার তথা ফ্ল্যাট মেইট সিদ্ধার্থ পিঠানিকে একাধিকবার বান্দ্রা থানায় হাজিরা দিতে দেখা গেছে।
সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে সঞ্জনা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েক আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেও যে সুশান্ত চলে যাওয়ার যন্ত্রণা ভুলতে পারছেন না সঞ্জনা সে কথা লিখেছিলেন তিনি। 'সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ক্ষত সেরে যায়-যেই কথাটা বলে থাকুক সে মিথ্যা বলেছে। মনে হচ্ছে বারবার সেই ক্ষত গুলো কেউ নতুন করে তাজা করে দিচ্ছে..রক্ত ঝরেই চলেছে-সেই মুহূর্তগুলো যা এখন থেকে শুধুই স্মৃতি,সেই হাসিগুলো ভাগ করে নেওয়া..না আর কোনওদিনও হবে না,অনেক প্রশ্ন যার উত্তর কোনওদিনও পাব না,একটা অবিশ্বাস যা বাড়তেই থাকবে’,ইনস্টাগ্রামের দেওয়ালে লেখেন সঞ্জনা।
সুশান্তের মৃত্যুর খবর সামনে আসবার পর একটি ইমোশ্যান্যাল ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন সঞ্জনা,সেখানে বলেন, 'আমি নিজের ওয়েব পেজটা ১০০ বার রি-ফ্রেস করেছি,ভেবেছি এই খবরটা ভুয়ো, কেউ একটা ভয়ঙ্কর রকমের মজা করছে। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হয় না এই জীবনে কোনদিনও বিশ্বাস করে উঠতে পারব। নিজের অনুভূতিটা প্রকাশ করতে সফল হব না,কিন্তু আমি চেষ্টা করছি'।
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করা হয় ২৪ জুলাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ডিজনি প্লাস হটস্টারে সরাসরি মুক্তি পাবে সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষ ছবি দিল বেচারা। সেই নিয়ে নেটিজেনরা ক্ষোভ উগরে দেন,কারণ প্রিয় তারকাকে শেষবার বড় পর্দায় দেখতে চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই প্রসঙ্গে সঞ্জনা জানান, ‘পর্দাটা আপতত বড়ো না হোক আমাদের মনটা কি বড় হতে পারে না?’
সঞ্জনা লেখেন,'এই সময় যন্ত্রণাটা মারাত্মক, সেটা আর বাড়িয়ে কী হবে? এই সবকিছু একা সমালানো সত্যি খুব কঠিন। আসুন নিজেদের এই জেদ থেকে মুক্তি দিয়ে দি, এই মুশকিল সময়টাকে একটু আসান করে ফেলি।
আসুন আমরা সবাই মিলে এক কিংবদন্তীর জীবনকে সেলিব্রেট করি,এবং ছবিটাকে? এটা একটা শ্রদ্ধার্ঘ জানানোর সময়, এই মারাত্মক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে আমরা রয়েছি। লড়াই করবার ক্ষমতা নেই, এমন একটা জিনিস চাইছেন যা বর্তমানে পূরণ করা অসম্ভব। আসুন না স্ক্রিনের সাইজ নিয়ে সময় নষ্ট না করি, আমাদের ভালোবাসা, আর পরিশ্রমের ফলস, ওর শেষ ছবি এবং আমি অন্তর থেকে বলছি ওর শ্রেষ্ঠ কাজ, এটা আমরা ততটাই বড় বানাতে পারব,যতটা আমরা চাইব, আসুন এটার উজ্জাপন করি, উপভোগ করি, সেলিব্রেট করি। যতরকমভাবে, সবরকমভাবে, আমরা কি পারব না?'