অস্টেওপরোসিস হচ্ছে এক ধরনের হাড়ের রোগ,এক রোগ একবার হলে তা ক্রমশ বাড়তেই থাকে এবং একটা সময় আপনি এটার কারণে চলৎ শক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলতে পারেন। এই রোগটি হলে হাড়ের ঘনত্বের উপর প্রভাব ফেলে,তাকে ভঙ্গুর করে তোলে সময়ের সঙ্গে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-র মতে, অস্টেওপরোসিস হল এক ধরনের রোগ যা হাড়ের ঘনত্ব কমায়, ভঙ্গুর করে তোলে যার ফলে হাড়ের টিস্যুর মধ্যে মাইক্রো আর্কিটেকচারাল ক্ষয় চিহ্নিত করা যায়। এই রোগটি একবার দেহে বাসা বাঁধলে তা সরাসরি আমাদের লাইফস্টাইলের উপর এফেক্ট করে।
নিম্নমানের ডায়েট এবং সঠিক পরিমাণের পুষ্টি না পেলে এই রোগ হতে পারে। এমনকী অতিরিক্ত ওজন হওয়ার ফলেও অস্টেওপরোসিসের শিকার হতে পারেন আপনি। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কী ভাবে এই রোগ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারবেন, অথবা যদি এই রোগ হয় তাহলে কী খাবেন আর কী খাবেন না। কারণ খাদ্যাভাসের মাধ্যমেই কিন্তু অনেক রোগ নিরাময় না করা গেলেও কন্ট্রোল করা যায়।
খারাপ খাদ্যাভাস, পুষ্টির ঘাটতির ফলে কম বয়সেও অনেকে এই রোগের শিকার হন। যদিও শুরুর দিকে তেমন কোনও সিম্পটম বোঝা যায় না। কিন্তু যত বয়স বাড়তে থাকে তত এর সমস্যা প্রকট হতে থাকে। ডায়েটিশিয়ান গরিমা গয়াল বলেছেন, সঠিক পরিমাণের পুষ্টি পাওয়ার জন্য সঠিক খাবার খেতে হবে যাতে মাংসপেশির ক্ষমতা বাড়ে এবং হাড় ভাঙার সম্ভাবনা কমে। বয়ঃসন্ধির সময় সঠিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি খাওয়া প্রয়োজন, কারণ হাড়ের বৃদ্ধি এবং ডেভেলপমেন্ট ৩০ বছরের আগেই হয়ে যায়। হাড়ের ঘনত্ব কেমন হবে সেটা একান্ত ভাবে নির্ভর করে আমরা কী ধরনের খাবার খাচ্ছি তার উপর।
অস্টেওপরোসিস থেকে বাঁচতে বা হলে কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত দেখে নিন
ক্যালসিয়াম: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পরিমাণের ক্যালসিয়াম খাওয়া অত্যাবশ্যক। ৫০০মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৭০০ আইইউ পরিমাপের ভিটামিন ডি খেলে হাড় ভাঙার রিস্ক কমে যায়। দুধ,চিজ,সবুজ শাক সবজি,সোয়াবিন,ইত্যাদির থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি হচ্ছে হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কে কতক্ষন সূর্যের আলোয় রয়েছে সেটার উপরেই মূলত নির্ভর করে তাঁর শরীরের ভিটামিন ডির পরিমাণ। কারণ সূর্য আমাদের ভিটামিন ডি দিয়ে থাকে। এছাড়া খাবারের মাধ্যমেও ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব। ডিমের কুসুম,স্যালমন মাছ,ক্যাটফিশ,টুনা,মাশরুম ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি।
ফসফরাস: হাড়ের বৃদ্ধিতে ফসফরাস ভীষণ সাহায্য করে থাকে। প্রতিটি প্রোটিন জাতীয় খাবারেই ফসফরাস থাকে। ফসফরাস এবং ক্যালসিয়ামের অনুপাত খুব জরুরি তা সঠিক ভাবে কাজে লাগার জন্য। মাংস,মাছ,বাদাম,দুধ জাতীয় খাবারে রয়েছে ফসফরাস।
ভিটামিন কে: ভিটামিন কে শুধু ঘা সারাতে সাহায্য করে তাই নয়, পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন কে কম বেশি প্রতিটা খাবারেই থাকে।
যে খাবারগুলো অস্টেওপরোসিস হলে খাবেন না
সোডা বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খাবেন না। যত বেশি এই ধরনের খাবার খাবেন তত আপনার হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকবে। এগুলোর সঙ্গে দুধ জাতীয় খাবার বদলে নিন আপনার খাদ্যাভাসে।
সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাবেন না। অস্টেওপরোসিসে যত বেশি সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাবেন তত বেশি শরীর থেকে ক্যালসিয়াম বেরিয়ে যাবে। তাই নুন খাওয়া আপনাকে কমাতে হবে অস্টেওপরোসিস হলে।
এগুলো ছাড়া শরীর চর্চার দিকে আপনাকে যথেষ্ট নজর দিতে হবে। ওজন বহন ব্যায়াম করলে হাড় শক্ত হয়। তার গঠন ভালো হয়। তাই অস্টেওপরোসিস থেক বাঁচতে বা তা হলে সঠিক ভাবে নিজেকে ভালো রাখতে সঠিক খাবার খান,ব্যায়াম করুন।