একদিকে প্রকাণ্ড ইতিহাস, অন্যদিকে রহস্য ও অলৌকিক নানান কাহিনির সংমিশ্রণ। এই দুইয়ের মাধ্যমেই উঠে আসে পুরীর সূর্যমন্দিরের নানান কথা। 'আইনি আকবরি' থেকে রবীন্দ্র সাহিত্যতে উল্লেখ রয়েছে এই এই মন্দিরের। গঙ্গা রাজবংশের রাজা প্রথম নরসিংহদেবে আমলে এই মন্দির তৈরি হয়। বলা হয়, ষোড়শ শতকে এখানে পুজোর প্রচলন ছিল। এখনও রথ সপ্তমী এখানেই পালিত হয়।
বহু বাস্তুকার, বহু ইতিহাসবিদের লেখা নানান রচনার রহস্যে রয়ে গিয়েছে এই সূর্যমন্দির। এবার ২০২২ সালে এসে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, ওড়িশার কোনার্ক সূর্য মন্দিরের মেরামতি এবার করা হবে। আর তার পুরনো উজ্জ্বল , আসল রূপই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এই কাজ যে ততটা সহজ নয় তা বলাই বাহুল্য। জেনে নেওয়া যাক কোন পরিকল্পনা মাফিক এই কর্মকাণ্ড এগোবে।
শোনা যায়, ১৯০০ সালে ব্রিটিশ সাহেবরা মন্দিরের জগমোহন অংশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেখানে বালি ঢেলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। যাতে আর কোনও অংশ ভেঙে না পড়ে। চারটি দরজার দিক বন্ধ করে ৩৯ মিটার উঁচু অংশ বালিতে ঢাকতে সেই সময় ৩ বছর সময় লেগেছিল। এখন এর মেরামতি এ সংস্কারের জন্য খুবই সন্তর্পণে পথ চলার কথা বলা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমের দিকে যেখানে ৫ থেকে ৭ ফুটের একটি জানালা খনন করা হবে। যার উপরে রয়েছে বালির স্তূপ। সেখান থেকে ১৪ মিটার উচ্চতার একটি সুড়ঙ্গ করা হবে। এরমধ্য দিয়ে কর্মীরা যাতায়াত করে মেরামতির কাজ করবেন। ফলে মন্দির বন্ধ না করেই হবে মেরামতি। যাতে সামান্য কিছুটা বালি সরিয়ে সেখানে প্রবেশ করা যায় তার বন্দোবস্ত হবে প্রথমে। এরপর একটি ইন্টারনাল কংক্রিট প্ল্যাটফর্ম বানানো হবে। যার হাত ধরে জগমহনের শিখরের অংশ রক্ষা করা যাবে। বেঙ্গালুরুর ট্রাফিক নিয়ে ঠাট্টা? জ্যামের চক্করে একজন প্রেমিকাও খুঁজে পেয়েছেন!
ধীরে ধীরে বালি সরলে কর্মীরা জগমোহনের মাথা পর্যন্ত গিয়ে কাজ করতে পারবেন। তবে ঠিক কত বছরে এই বালি সরানোর কাজ শেষ হবে তা জানা যাচ্ছে না। কর্মাকর্তারা বলছেন, সম্পূর্ণ বিষয়টিই নির্ভর করবে ইমারতের নিরাপত্তার ওপর। ইমারত অক্ষুণ্ণ রাখাই প্রথম পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে। কম্পনের পরিমাণ মেপে ইমারতকে অক্ষুণ্ণ রাখার প্রক্রিয়া জারি থাকবে বলেও জানানো হয়।
বলা হচ্ছে, কোনার্কের সূর্যমন্দিরের ধারণ ক্ষমতা এক একটি দিকে এক এক রকমের। ব্রিটিশ কনসারভেশন বাস্তুকার স্যার বার্নার্ড ফিল্ডেনের দেখানোর রাস্তা ধরেই বর্তমানে বাস্তুকাররা কোনার্ক মন্দিরের সংস্কারের কাজে হাত দিচ্ছেন। এছাড়াও ইতালিয় অধ্যাপক ইং ক্রোসির রিপোর্ট মেনেও তাঁরা এগোতে চাইছেন। এবার অপেক্ষা সেই সুষ্ঠুভাবে এই গোটা পর্ব সমাধানের।