HT বাংলা থেকে সেরা খবর পড়ার জন্য ‘অনুমতি’ বিকল্প বেছে নিন
বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Poila Baishakh Halkhata: পুরনো বিকেলে ফুরনো হালখাতায় ফুরিয়েছে হিসাব, নববর্ষে বৈঠকখানা তাকিয়ে অতীতের দিকে

Poila Baishakh Halkhata: পুরনো বিকেলে ফুরনো হালখাতায় ফুরিয়েছে হিসাব, নববর্ষে বৈঠকখানা তাকিয়ে অতীতের দিকে

Poila Boishakh 1430: আজ বাংলার নতুন বছরের শুরু। পয়লা বৈশাখ। আবার হালখাতা পুজোর দিনও। কলকাতার অন্যতম বড় মুদির বাজার বৈঠকখানায় হালখাতা পুজোর জমক এখন কতটা? কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?

হালখাতা পুজোর আগের সন্ধ্যায় বৈঠকখানার অস্থায়ী দোকান।  

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। শুকনো গরম। দু’পা হাঁটতে গেলেই গলা শুকিয়ে যায়। আকাশে মেঘের চিহ্নমাত্র নেই। আগামী বেশ কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিও হওয়ার কথা নয়। বৈশাখে পা দেওয়ার আগেই প্রকৃতি বুঝিয়ে দিচ্ছে, গ্রীষ্মকাল কাকে বলে। গরমের চোটেই কি না কে জানে, সন্ধ্যার মুখেও বাজার বেশ ফাঁকা। শিয়ালদহ সংলগ্ন বৈঠকখানা বাজারে দিনের এ সময়ে এত ফাঁকা হওয়ার কথা নয়। অফিস ফেরতা ক্রেতাদের ভিড় তো বটেই, তার সঙ্গে এক দিন বাদেই পয়লা বৈশাখ। তাই ভিড় আরও বেশিই তো হওয়ার কথা। কিন্তু যা কথা থাকে, তার কতটাই বা রাখা যায়!

রাস্তার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মনোজ সাউ। কমলা টিশার্ট, কালো প্যান্ট পরা মনোজ এই এলাকার বেশ কয়েকটি গুদাম ঘরের মালিক। গুঁড়োমশলা আর হিংয়ের ব্যবসাও আছে। এছাড়া আছে মরশুমি ব্যবসাও। মরশুমি মানে, এই যেমন এখন। পয়লা বৈশাখের আগে। এ সময়ে লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি নিয়ে রাস্তায় দোকান দেন মনোজের কর্মচারীরা। ভিতরে গলিতে গুদাম। সেখানও থরে থরে সাজানো মূর্তি।

এ বছর হালখাতার বাজার কেমন?

মোটা গোঁফে আঙুল বুলোতে বুলোতে মনোজ একটু ভাবেন। তার পরে সরল হাসি হেসে বলেন, ‘ব্যবসা আর কই! আগেকার মতো হালখাতার আর কিছুই নেই। ব্যবসাপাতি সব গোল্লায়...’

বৈঠকখানা বাজারের মনোজ সাউ

কেন হালখাতার পুজো তো হয়? তাহলে মূর্তি বিক্রি হয় না?

মনোজ বলেন, ‘না, কোভিডের আগে ভালো ব্যবসা হত। এই সময়ে এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই। পুরনো মূর্তির স্টকই খালি হয় না।’ গুদামে ডেকে নিয়ে যান, সারি দিয়ে রাখা লক্ষ্মী-গণেশ। মনোজের মতোই ফ্যালফ্যালে চোখে তাকিয়ে আছে মূর্তিগুলো। পুজো হওয়ার অপেক্ষায়। কবে হবে, দেবা না জানন্তি, কুত্রাপি মনুষ্যা!

কলকাতার সবচেয়ে পুরনো বাজারের একটি এই বৈঠকখানা। অনেকের মতে, এক সময়ে খোদ জোব চার্নক এখানে তাঁর ইয়ারদোস্তদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। সে সময়ে এখানে নাকি ছিল বিরাট এক বটবৃক্ষ। তার চিহ্ন বহু দিন আগেই হাওয়ায় মিশে গিয়েছে। অনেকের ধারণা, বৈঠক বসানোর সেই বটগাছের জায়গাতেই নাকি এখন শিয়ালদহ স্টেশন। আমআদমি রোজ যে পথে হেঁটে-ছুটে স্টেশনে ঢোকেন, বেরোন, ট্রেন ধরেন, পিছলে যান, হোঁচট খান— তারই অনেক তলায় কোথাও না কোথাও রয়ে গিয়েছে চার্নক সাহেবের আড্ডার আস্তানা— বটগাছটির শিকড়বাকড়।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওভাবে তলিয়ে যায়নি চার্নক সাহেবের সমকালীন এই বাজারটি। এক সময়ে বৈঠকখানা বাজারে কাগজের মিল, গুড়, মশলা, চা থেকে শুটকি মাছ— সব কিছুরই দোকান ছিল। এখনও আছে। তবে আলাদা আলাদা জায়গায় ভাগ হয়ে। মাহাত্মা গান্ধী রোড বা পূর্বতন হ্যারিসন রোডের দিক দিয়ে শিয়ালদহ ঢোকার পথের ডানদিকের অংশ জুড়ে রয়ে গিয়েছে বৈঠকখানার মুদির দোকান। এক সময়ে সন্ধ্যা হলেই যেখানে জ্বলে থাকত লন্ঠন বা হ্যাজাকের আলো, সেখানে এখন বাল্বের জমানা পেরিয়ে সাদা ফ্যাটফ্যাটে এলইডি লাইট। বাজারের পেটের ভিতর দিকে কয়েক জায়গায় আবার শখ করে হলুদ এলইডি লাগিয়েছেন কোনও কোনও বিক্রেতা। যদিও দোকান ফাঁকা।

বৈঠকখানার ব্যবসায়ী বিভূতি সাউ

আপনারা হালখাতা করবেন?

‘পুজো হবে। পুজো তো প্রতি বছরই হয়। কিন্তু হালখাতার রেওয়াজ আর নেই।’ গরম তাড়াতে খালি গায়ে বসে স্যান্ডো গেঞ্জি দিয়ে হাওয়া খাচ্ছিলেন দীপক সাহা। কয়েক প্রজন্মের গুড়ের ব্যবসা এই বাজারে। এখন খেজুর গুড়ের সময় শেষ। তাই স্যান্ডো গেঞ্জি শুধু হাওয়া খাওয়ার হাতিয়ার, মাছি তাড়ানোরও নয়।

‘হালখাতার পুজো হত মাছ পট্টিতে। সে পুজো ছিল দেখার মতো।’ পাশ থেকে বলেন বিভূতি সাউ। বয়স সত্তর ছুঁই ছুঁই। চোখে মোটা কাচের চশমা। এতই মোটা ওপারের চোখ দুটো প্রায় দেখাই যায় না। দীপকবাবুর সঙ্গে অংশীদারী ব্যবসা করেন বিভূতিবাবু। তাঁদের দোকানও চলছে দুই অংশীদারের কয়েক প্রজন্ম ধরে। একশো বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে ব্যবসার বয়স।

তা কত বছর আগে বন্ধ হয়েছে মাছ পট্টির হালখাতা পুজো?

‘অনেক দিন। সাত-আট বছর তো হবেই।’ নিজের কথাকে নিজেরই বোধহয় খুব একটা বিশ্বাস হচ্ছিল না বিভূতিবাবুর। বয়স বাড়লে সময়ের হিসাব বোধহয় ঠিকঠাক থাকে না। সংখ্যাটা সাত-আট না হলে সাতাশ-আঠাশ হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ‘এখন দোকানে হালখাতা রাখা আছে। বছরে একবার পুজো হয়। ওই পর্যন্তই।’

হলাখাতার আগের রাতে পয়লা বৈশাখের অপেক্ষায় বৈঠকখানা। 

বিভূতিবাবুর ঠিক পাশের দোকানটারই মালিক উত্তম দাস। মধ্যমগ্রামের উত্তমবাবুরও কয়েক প্রজন্মের ব্যবসা বৈঠকখানায়। গুড়ের মরশুমে বাজারের ভিতরে লজ ভাড়া করে থাকেন। চার-পাঁচ মাস বাড়িমুখো হন না। পয়লা বৈশাখ হালখাতা পুজোর পরে হয়তো ফিরবেন। ‘এখন হালখাতার পুরোটাই প্রতীকী, বুঝলেন! ধার-বাকিতে মাল নেওয়ার সময়ে হিসাবের জন্য হালখাতার ব্যবস্থা ছিল। এখন সে সব দিন গিয়েছে। পুজো করার নিয়মটা রয়ে গিয়েছে। শুধু ওইটুকুই করি আমরা। তবে সাধ্যমতো আলো দিয়ে সাজিয়ে, জাঁক করেই পুজো করি।’ বললেন তিনি।

পুজো হয়। তবে খুব বেশি ক্রেতা আর হালখাতায় নাম লেখাতে আসেন না। কেউ বলেন আকবরের আমলে, কেউ বলেন আকবর না-হলেও মুঘল যুগে খাজনা আদায়ের হিসাব রাখতেই এই হালখাতার শুরু। পরে এটি জড়িয়ে যায় বাংলা নববর্ষের সঙ্গে। ধীরে ধীরে হালখাতা পুজো হয়ে ওঠে বাংলার ব্যবসায় ক্রেতা-বিক্রেতার জমাখরচের হিসাব নেওয়ার অনুষ্ঠান। বছরের প্রথম দিনে আগের বছরের দেনা মিটিয়ে হিসাব চুকিয়ে নতুন করে কেনা শুরুর দিন, মিষ্টি নিয়ে বাড়ি ফেরার দিন।

কে আর মিষ্টি নিয়ে বাড়ি ফিরবেন? ‘শিশির মার্কেট হয়ে যাওয়ার পরে ওই দিকটাতেই ভিড় বাড়তে লাগল। এদিকে আর অফিস ফেরতাদের ভিড় কই! গুড়ের সময়টুকু যা ভিড় হয়, বাদ বাকি ফাঁকা-ফাঁকা-ফাঁকা’, বলেন দীপকবাবু। ‘এখন তো ধারে বিক্রিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোভিডের পরে বিক্রিই কমে গিয়েছে। মুদিখানার দোকানেও বিশেষ কারওধার থাকে না। বড় বড় কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটররা মফসসলের দোকানে গিয়ে নিজেরাই মাল দিয়ে আসেন। ফলে সে সব জায়গা থেকে দোকানদাররা যে বৈঠকখানায় এসে মাল কিনে নিয়ে যাবেন, তারও প্রয়োজন নেই। ফলে এখানকার দোকানে আর কে জমাখরচের হিসাব করবে! ধার যদি দিতেও হয় বড় কোম্পানিরাই দিচ্ছে। বৈঠকখানাও তাই জাবদা হালখাতা জলে ভাসিয়ে, প্রতীকী লালখাতায় নমো নমো করে পুজো সারছে।’ বলেন উত্তমবাবু।

বৈঠকখানার গুড় ব্যবসায়ী উত্তম দাস। 

সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হতে চলল। এবার ফিরতে হবে। রাত পেরোলে পয়লা বৈশাখ। মনোজ সাউ এখনও ‘মরশুমি’ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। রাস্তায় পাতা প্লাস্টিকের উপর থেকে লক্ষ্মী-গণেশ পথচারীদের দিকে তাকিয়ে, মনোজের মাথার দু’পাশ দিয়ে গুদামের ভিতর থেকেও তাকিয়ে তাঁরা। এলইডি-র ফ্যাটফ্যাটে আলো যেখানে পৌঁছোয় না, সেখান থেকে সারি দিয়ে জোড়া জোড়া চোখ নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্যান্ডো গেঞ্জির ঝাপটানিতে ওঠা বাতাসের দমকের দিকে, সাত কিংবা সাতাশ বছর আগে শেষ হওয়া মাছ পট্টির হালখাতা পুজোর দিকে, পুরু চশমার কাচের দিকে, ঠিক যেখানটায় চার্নক সাহেবের আড্ডার বটগাছটি ছিল তার হারিয়ে যাওয়া শিকড়ের দিকে। সেই সব কিছুর দিকে তাকিয়ে, যে দলে তাঁদেরও মিশে যাওয়ার সময় হল বলে।

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)

টুকিটাকি খবর

Latest News

‘BJP-র প্রচার করছেন,’ খড়্গপুরে পরিদর্শনে এসে তৃণমূলের বিক্ষোভে পড়লেন রেল জিএম এবার অন্ধ্র,তেলাঙ্গানায় ভোট! দিল্লিতে দক্ষিণী পড়ুয়াদের সঙ্গে ভুরিভোজে নির্মলা চুঁচুড়ায় আবেগে ভাসলেন মোদী, মাদার্স ডে-তে সভার মাঝে চোখে পড়ল মায়ের ছবি! এরপর? জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে নালিশ, নির্বাচন কমিশনে চিঠি তৃণমূলের Nusrat-Yash Son: নুসরতের সঙ্গে একফোঁটা মিল নেই, যশের বড় ছেলের মতো দেখতে ইশানকে? তিলক বর্মা আউট হতেই গৌতির ‘গম্ভীর’ মুখে ফুটল হাসি, মজা করলেন ধারাভাষ্যকাররাও আদর করে নাম রেখেছেন সৈতামা, তারই সঙ্গে খেলায় মজে জাহ্নবী স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের স্বপ্নপূরণের চেষ্টা রাজকুমারের,সফল হলেন?প্রকাশ্যে ছবির ঝলক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা, পথ দুর্ঘটনায় মৃত ‘ত্রিনয়নী’র 'তিলোত্তমা'র T20 বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি উইকেট নিয়েছেন কারা? দেখুন সেরা পাঁচের তালিকা

Latest IPL News

তিলক বর্মা আউট হতেই গৌতির ‘গম্ভীর’ মুখে ফুটল হাসি, মজা করলেন ধারাভাষ্যকাররাও IPL 2024- রোহিতকে ট্র্যাপে ফেলারই চেষ্টা ছিল, উদ্দেশ্য সফল হওয়ার পর বললেন বরুণ ঘরের মাঠে এটাই কি শেষ IPL ম্যাচ ধোনির? মাহি আবেগে ভাসল চিপকের গ্যালারি দলের পরিবেশ বদলে গেছে, এতদিন তা ছিল না…ম্যাচ জয়ের পর কার দিয়ে আঙুল তুললেন নীতিশ? RCB-র প্লে-অফের রাস্তা বিরাটদের হাতে নেই! বউয়ের সঙ্গে ফুরফুরে মেজাজে কোহলি IPL-এর মাঝপথে বিদেশিরা দল ছাড়লে শাস্তির নিদান গাভাসকরের, বাদ যায় না যেন বোর্ডও IPL 2024- শাহরুখের কোন চালে বাজিমাত নাইটদের, রহস্য ফাঁস করলেন সিধু, দেখুন ভিডিয়ো IPL 2024-এর প্লে-অফে উঠেও শান্তি নেই, ফের BCCI-এর শাস্তির মুখে এক KKR তারকা IPL-এর ম্যাচে মহেন্দ্র সিং ধোনির পা ছুঁয়ে প্রণামের জের, গারদে ঠাই ক্রিকেটভক্তের সুনীল, সরি বরুণ… বারবার KKR স্পিনারকে সুনীল বলেই সম্বোধন করে গেলেন মুরলি কার্তিক

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.
প্রচ্ছদ ছবিঘর দেখতেই হবে ২২ গজ