বেশ কয়েকজনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন শাড়ি পরা মাঝবয়সি মহিলাটি। হঠাৎই অনায়াসে দুই হাতে তুলে নিলেন প্রায় ২০ কেজির একটি বারবেল। দক্ষ কায়দায় হাত দুটো উঠে গেল মাথার উপর। কয়েক মুহুর্ত সেভাবে থাকার পর ধীরে ধীরে নেমে এল বারবেল সমেত। সঙ্গে সঙ্গে হাততালি দিয়ে ওঠেন আশেপাশের লোকরা। এমন একটি ভিডিও দেখে স্বাভাবিকভাবে নেটাগরিকরা প্রথমে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন। পরের মুহূর্তেই প্রশংসায় ভরে উঠতে থাকে কমেন্ট সেকশন। কিছুক্ষণেই ভাইরাল হয়ে যায় সে পোস্ট।
চেন্নাইয়ের এক মহিলা এভাবেই সব ভুল ধারণা ভেঙে উৎসাহ দিলেন জিম করার। ভিডিও কিছুদিন আগে হিউম্যান অফ মাদ্রাজ পেজের তরফে পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে জানানো হয়, মহিলাটির বয়স ৫৬ বছর। প্রায় ষাটের কাছাকাছি হয়েও তিনি এমন ফিট। এতেই সবাই অবাক হয়ে যান।
কীভাবে এটা সম্ভব হল? সেটি জানতে পেজটি আরও তথ্য সংগ্ৰহের চেষ্টা করে। তাদের পরবর্তী পোস্টে মহিলাটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়। মহিলাটি নিজেই জানান, ৫২ বছর বয়সে হঠাৎই তাঁর পা ও হাঁটুতে ভীষণ ব্যথা শুরু হয়। সে সময় তাঁর ছেলে তাঁকে বেশ কিছু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। পাশাপাশি ওষুধও চলতে থাকে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। আলাদা আলাদা চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেও রেহাই মেলেনি ব্যথা থেকে। শেষ চেষ্টা হিসেবে ছেলে তাঁকে জিমে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল। ছেলের ধারণা ছিল, জিম নিয়মিত শুরু করলে গাঁটের ব্যথা কমলেও কমতে পারে। সেইমতো বৌমার সঙ্গে জিমে যেতে শুরু করেন তিনি। প্রথম প্রথম শরীরের নিচের অঙ্গের ব্যায়ামগুলো করতেন। ধীরে ধীরে অন্য ব্যায়ামও শুরু হয়। পাঁচ মাসের মধ্যে তার ফল পান। পা ও হাঁটুর ব্যথা একেবারে উধাও হয়ে যায়। এরপর আর ব্যায়ামে ইতি টানেননি। বরং জিমে গিয়ে ভারোত্তোলন, বাড়িতে নাতির সঙ্গে খেলাধুলো, মাঝে মাঝে হাঁটতে যাওয়া এসবেই দিন কেটে যায় তাঁর।
তাঁর কথায়, “পায়ের ব্যথা সেরে যাওয়ার পর বুঝতে পারি, রোজ ব্যায়াম করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি শরীরের কোথাও ব্যথা হলে আতঙ্কিত না হয়ে তার মোকাবিলা করতেও শিখেছি।"
তাঁর এই পোস্ট দেখে একজন কমেন্টে জানান, দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের সম্পর্কে যে ধারণাগুলো ছিল, সে সব তিনি আজ ভেঙে দিলেন। একই ধরনের বক্তব্য আরও অনেকগুলো কমেন্টে ফুটে ওঠে। ‘যে কোনও বয়সে জিমে গিয়ে ফিট থাকা যায়, ইনি সেটা প্রমাণ করে দিলেন’ এমন কমেন্টও ভেসে উঠতে থাকে।