ফের দেশের বিশাল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ। নতুন ওমিক্রন ভাইরাসের প্রকৃতি নিয়ে এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রনের বর্তমান সাবভ্যারিয়ান্টটি অন্যগুলির তুলনায় অনেক গুণ সংক্রমক। ওমিক্রন- এক্সবিবি মূলত এর আগের দুই ভ্যারিয়্যান্ট বিএ২.১০.১ ও বিএ২.৭৫-এর রিকম্বনিশনে তৈরি। নতুন এই ভ্যারিয়ান্টের ফলেই সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া দিতে পারে দেশজুড়ে।করোনাকালের শুরুতেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন , সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় বদল আসতে পারে কোভিড-১৯ ভাইরাসের। প্রায় ৩ বছর পরেও কোভিডের ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়ান্ট দেখা দেওয়ায় সে কথাই প্রমাণিত হচ্ছে। ওমিক্রন সাবভ্যারিয়ান্ট মূল ওমিক্রনের ভাইরাসের থেকে সামান্য আলাদা।
ভারতীয় সার্স কোভ-২ জিনোমিক কনসর্টিয়াম এই সাবভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত বেশকিছু মানুষের উপর গবেষণা চালিয়েছে। দেখা গিয়েছে, এই ভ্যারিয়ান্টের ক্ষেত্রে উপসর্গ খুব মৃদু। এছাড়া সহজে রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করে না। কনসর্টিয়ামের মতে, কোভিডবিধি অনুসরণ করলে চিন্তার বিশেষ কারণ নেই। তাদের তরফে জানানো হয়েছে এ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
নতুন ওমিক্রন ভাইরাস আগের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রমক।দেহের স্বাভাবিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদ করতে সক্ষম এই সাবভ্যারিয়ান্ট। বিশেষজ্ঞদের মতামত, আগের কোনও সংক্রমণ থেকে অর্জিত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদ করতে পারে এই ভাইরাস। সবকটি টীকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তির শরীরেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে এই নতুন ওমিক্রন।
এই নতুন ভাইরাসের উপসর্গ আগের ভাইরাসগুলোর তুলনায় কিছুটা আলাদা। উপসর্গগুলির কথা একটি টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডাঃ সোনম সোলাঙ্কি। ডাঃ সোলাঙ্কি বর্তমানে মুম্বইয়ের মাসিনা হাসপাতালের ফুসফুসরোগ বিশেষজ্ঞ।
তাঁর কথায় সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেশি হলেও উপসর্গের দিক থেকে এই ভাইরাস তেমন ভয়ানক নয়। আবার, নতুন ভাইরাসের উপসর্গ মৃদু হলেও বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে তা থাকছে। এই ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত রোগী প্রায় চার সপ্তাহ পর্যন্ত সিম্পটোম্যাটিক থাকে।
ওমিক্রন ভাইরাসের কিছু সাধারণ উপসর্গ হল শুকনো কাশি, মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ ইত্যাদি। নতুন ভ্যারিয়ান্টের ক্ষেত্রে ফুসফুসের উপরের অংশে সংক্রমণ ছড়ালে ব্রঙ্কাইটিস বা ক্রনিক কাশির উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এছাড়া অন্য সব উপসর্গের তুলনায় ক্লান্তি এই নতুন সংক্রমণের প্রধান উপসর্গ।
এশিয়ান হাসপাতালের সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ চারু দত্ত অরোরার মতে, আরেকটি কোভিড ঢেউ আসার সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এর মূল কারণ সাম্প্রতিক উৎসবের আবহাওয়া। বর্তমানে দেশের কোনও অংশেই যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। এছাড়া উৎসবের মরশুমে বিশাল সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে জড়ো হচ্ছে। এতেই জোরালো হচ্ছে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা।