প্রায় দুই বছর হতে চলল। মুঠো ফোন হোক বা ল্যান্ড লাইন, উল্টো দিকের মানুষ ফোন ধরার আগেই জানান দিত সেই অমোঘ যান্ত্রিক সতর্কবার্তা— করোনায় কি করনীয় এবং তার পাশাপাশি শারীরিক দূরত্বের সঙ্গে মাস্ক পরার আহ্বান। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরক্তি জানিয়েছিলেন এই নিয়ে। কোনও ভাবেই এই কলার টিউন এড়িয়ে যাওয়ার পদ্ধতি ছিল না। কেউ কেউ তো আবার রেগেমেগে হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপের মাধ্যমে ফোন করার দিকে ঝুঁকছিলেন। প্রথম দিকে জসলিন ভাল্লারের রেকর্ড করা গলার আওয়াজ ছিল করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কলার টিউন। আর তার পরে অমিতাভ বচ্চনের গলা। পরবর্তীকালে অবশ্য টিকাকরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে মানুষকে জানানো হয়েছে।।
তবে এবার এই কলার টিউন থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভারতে এখন করোনায় আক্রান্ত এবং দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড মাত্রায় কমছে প্রতিদিন। সব দিক বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের থেকে জানানো হয়েছে, অতি শীঘ্রই কোভিড বিষয়ক কলার টিউন বন্ধ হবে।
যে কোনও মহামারি বা অতিমারি পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। যখন সারা পৃথিবীতেই ঝড়ের গতিতে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল, তখন ভারতের মতো দেশে উল্লেখজনক কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সচেতনতার আঙ্গিকে। অনেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘন ঘন টিভিতে আসা বা রেডিয়োর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেছিলেন। আবার অনেকেই জানিয়েছিলেন যে, গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিল। বলাই বাহুল্য, অনেকের পছন্দ না হলেও এই বিশেষ কলার টিউন বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে ‘hammering’-এর কাজ করেছিল, যা মনস্তত্ত্বের দিক থেকে কার্যকরী হয়েছিল।
এরপরে কি কখনও আবার সব ভারতীয়র একই কলার টিউন হতে পারে অদূর ভবিষ্যতে? সামনের দিনই এর উত্তর দেবে। তবে ইতিহাস কিন্তু করোনানামায় মনে রেখে দেবে সেই লাইন, ‘নমস্কার, করোনাভাইরাস…’