হু হু করে ছড়িয়ে পড়া ওমিক্রনের সংক্রামক ক্ষমতা বেশি হলেও, তার মারণ ক্ষমতার তেমন প্রপোক দেখা যায়নি। এছাড়াও, যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে করোনা পজিটিভ হয়েছেন, তাঁরাও খুব কম সময়ের মধ্যেই সুস্থ হয়েছেন। তবে বহু ক্ষেত্রেই সমস্যা দানা বাঁধছে কোভিড কাটিয়ে সেরে ওঠার পর। করোনার জেরে কোভিড পরবর্তী সময়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ঘিরে নানান উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করেছে। আর সুস্থ থাকতে এই উপসর্গগুলি খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
থেকে যায় সমস্যা
দেখা যাচ্ছে ওমিক্রন কাটিয়ে ওঠার পর হৃদরোগের সমস্যা, ব্রেন ফগ, শ্বাসকষ্ট, শরীরে ব্যথা, ঘুমের সমস্যা সহ একাধিক জটিলতা দেখা যাচ্ছে। সমস্ত ধরনের বয়সের মানুষের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে, যাঁরাই ওমিক্রন কাটিয়ে উঠেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রনের যে দীর্ঘায়িত কারণ রয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম দিক হল, রোগীদের দেহে কিছু আচমকা তৈরি হওয়া জটিলতা। চিকিৎসকরা বলছেন, এক এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের শারীরিকবৃত্তি আলাদা রকমের হয়। তাঁদের মতে, কোভিড সারিয়ে ওঠা রোদীগের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে একটি দীর্ঘায়িত উপসর্গ ৩ সপ্তাহ ধরে থাকে। বা কখনও তার বেশিও হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমস্ত ধরনের মানুষের মধ্যেই ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে যাঁরা ৬০ বছরের উর্ধ্বে তাঁদের মধ্যে এই সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সতর্ক হোন
চিকিৎসক সন্তোষ ঝা বলছেন, 'যে সমস্ত রোগীর ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, হৃদরোগ, কিডনির বহুদিনের সমস্যা, বয়সজনিত সমস্যা, ক্যানসার রয়েছে, তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার অনেক সময় জটিলতায় চলে আসে।' চিকিৎসকদের দাবি, যাঁদের বয়স ষাট বছরের উর্ধ্বে তাঁদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সচেতন থাকা উচিত। এছাড়াও যাঁদের কো মর্বিডিটি রয়েছে তাঁদেরও উচিত সচেতন থাকা। যাঁরা ডিপ্রেশন ও অ্যাংজাইটির শিকার তাঁরা কোভিড থেকে সেরে উঠলেও বহুদিন ধরে নানান ধরনের উপসর্গ থেকে যায় শরীরে।
উপসর্গ
করোনা পরবর্তী সময়ে যে সমস্ত ধরনের উপসর্গ শরীরে দেখা যায়, তা হল, বহুদিন ধরে থেকে যাওয়া দুর্বলতা। শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট, এছাড়াও থাকে, বহু ধরনের স্মৃতি বিলোপের ঘটনা। অনেক সময় মনোনিবেশ করে কিছু করতেও সমস্যা দেখা যায়। আবার পুরনো স্মৃতি হারিয়ে যেতে থাকে মানুষের মস্তিষ্ক থেকে। এছাড়াও কোভিড কাটিয়ে উঠলেও ঘুমের সমস্যা থেকে যায়, থাকে শরীরের যন্ত্রণা, পেশীর যন্ত্রণা। সঙ্গে থাকে মাথার যন্ত্রণা। চিকিৎসকরা বলছে, বহু সময় মেজাজ খারাপ থাকে, আবার ব্রঙ্কাইটিস বা কাশির সমস্যাও থেকে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন শিশুদের ক্ষেত্রে ফাইব্রোসিসের সমস্যাও থাকে। ফলে শিশুরা কোভিড থেকে উঠলে তাদের ফুসফুসের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।