রেলওয়ে বোর্ড একদিনে ১৯ জন সিনিয়র ফার্স্ট ক্লাস অফিসারকে জোর করে অবসর দিয়েছে। তাদের স্বেচ্ছা অবসরে (ভিআরএস) পাঠানো হয়েছে। কাজ পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, এসব কর্মকর্তার মধ্যে অনেকেই অদক্ষ এবং আগে থেকেই বারবার তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল। এর আগে ৭৫ জন কর্মকর্তাকে ভিআরএস দিয়েছিল বোর্ড।
রেলওয়ে সূত্র জানা গিয়েছে, যাদের ভিআরএস দেওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল, পার্সোনাল, মেকানিক্যাল, স্টোর, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, সিগন্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং ট্রাফিক সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে রেলওয়ে বোর্ডের দুই সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং জোনাল রেলওয়ের একজন জেনারেল ম্যানেজার রয়েছেন। এছাড়াও পশ্চিম রেল, সেন্ট্রাল রেলওয়ে, ইস্টার্ন রেলওয়ে, নর্দার্ন সেন্ট্রাল রেলওয়ে, নর্দার্ন রেলওয়ে, রেল কোচ ফ্যাক্টরি কাপুরথালা, মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি রায়বেরেলি, ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কস বারাণসী এবং আরডিএসও-লখনউ সহ রেলওয়ে আন্ডারটেকিং-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও ভিআরএস-এ পাঠানো হয়েছে।
সূত্র অনুসারে, ভারতীয় রেলে অফিসারদের ভিআরএস দেওয়ার প্রক্রিয়া ২০২১ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল। এতে নয়জন কর্মকর্তাকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে, ছয়জনকে অগস্টে, চারজনকে সেপ্টেম্বরে, সাতজনকে অক্টোবরে, নয়জনকে নভেম্বরে এবং ছয়জনকে ডিসেম্বরে ভিআরএস দেওয়া হয়। নতুন বছরে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ১১ জন, ফেব্রুয়ারিতে আটজন, মার্চে সাতজন, এপ্রিলে পাঁচজন এবং ১০ মে পর্যন্ত তিনজন কর্মকর্তাকে ভিআরএস দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: এক ধাক্কায় বিলুপ্ত দেড় লাখ পদ! ক্রমেই চাকরির সংখ্যা কমাচ্ছে রেল
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফান্ডামেন্টাল রুটের (এফআর) ধারা-৫৬ (জে) অধীনে সরকার ওই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করতে পারে। এই প্রক্রিয়ার আওতায় অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দুই থেকে তিন মাসের বেতন দেওয়া হয়। পেনশন ও অন্যান্য বকেয়া সুবিধাও দেওয়া হয়। যেখানে স্বেচ্ছা অবসর (ভিআরএস) স্কিমে, কর্মচারীকে চাকরির অবশিষ্ট বছর অনুসারে প্রতি বছর দুই মাসের ভিত্তিতে বেতন দেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক অবসরে এই সুবিধা পাওয়া যায় না।
সূত্র জানায়, জুন-জুলাই মাসে ভিআরএসে পাঠানো হবে এমন কর্মকর্তাদের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করা হচ্ছে। বলা হয়, ওই কর্মকর্তারা ভিআরএস চেয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হল, তাঁদের অযোগ্যতা, কাজের প্রতি সততা, খারাপ পারফরম্যান্স ইত্যাদির জন্য দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করা হচ্ছিল। কাজ পর্যালোচনা করে তিন সদস্যের কমিটি তাঁদের ভিআরএস নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল। অফিসাররা রেলওয়ের বাধ্যতামূলক অবসরে ভিআরএস-এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন।