ফের বড়সড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ উত্তরাখণ্ডে। উত্তরাখণ্ডের নীতি উপত্যকায় এক তুষার ধসের খবর পাওয়া যায়। চিনা সীমান্তের কাছে চামোলিতে এই দুর্যোগ হয়। এই দুর্যোগের কোপে পড়ে বর্ডার রোড অর্গনাইজেশনের একটি ক্যাম্প। সেনার তরফে জানা গিয়েছে, সেই ক্যাম্প থেকে এখনও পর্যন্ত ৩৮৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গিয়েছে। তাদের দেহ উদ্ধার করেছে সেনা। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) জানিয়েছে ঋষিগঙ্গা নদীতে জলের উচ্চতা ২ ফুট বেড়ে গিয়েছে৷ এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসেই হিমবাহ ভেঙেছিল উত্তরাখণ্ডে। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ।
এদিকে নীতি উপত্যকার ঘটনায় টুইট করেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত। টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'আমরা নীতি ভ্যালির সুমনা এলাকায় হিমবাহ ভাঙ্গার খবর পেয়েছি। আমি এ বিষয়ে একটি সতর্কতা জারি করেছি। আমি জেলা প্রশাসন ও বর্ডার রোড অর্গনাইজেশনের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলেছি।' তিরথ সিং আরও লেখেন, 'জেলা প্রশাসনকে এই ঘটনা সংক্রান্ত সব তথ্য পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি। এনটিপিসি এবং অন্যান্য প্রকল্পে রাতের বেলা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।'
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চামোলির জেলা প্রশাসক স্বাতি ভদৌরিয়া বলেন, 'সেখানে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত করার জন্য আমি বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন এবং আইটিবিপি-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। সেখানে কী ঘটেছে তা দেখতে ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছেন একজন শীর্ষ স্থানীয় বিআরও কর্মকর্তা। অঞ্চলটি জনশূন্য তবে এখানে আইটিবিপি এবং বিআরও কর্মরতদের পোস্ট রয়েছে।'
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চামোলি জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এনকে যোশী বলেন, 'অঞ্চলটি খুব প্রত্যন্ত এবং ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে এই তুষারময় পরিস্থিতিতে সময় লাগবে। সুমনা অঞ্চলে কেউ থাকে না৷ সেখানে আইটিবিপি-র ক্যাম্প আর বিআরও-দলের লোকজন কাজ করে৷' এদিকে স্থানীয়ারা জানান, গত তিনদিন ধরে চামোলি জেলায় তুষারপাত এবং বৃষ্টি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নীতি উপত্যকাটি উত্তরাখণ্ডের যোশী মঠের কাছে অবস্থিত একটি প্রত্যন্ত এলাকা। ভারত-চিন সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই উপত্যকা ১১ হাজার ৮০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। নীতি উপত্যকার পাসটি ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের পর সিল করে দেওয়া হয়েছিল।