চামোলির তপোবনে এনটিপিসি–র জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ১.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে এখনও আটকে রয়েছে ৩৬ জন কর্মী। শুক্রবারও জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। সুড়ঙ্গের ভেতরে রয়েছে ভারী ভারী বোল্ডার আর ধ্বংসাবশেষ এত পরিমাণে রয়েছে যে সেগুলি সরিয়ে মাত্র ১০০ মিটার এগোনো গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ৩৬টি দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। কিন্তু ২৬ জনের পরিচয় এখনও সামনে আসেনি। রবিবারের বিপর্যয়ের পর থেকে ২০৪ জন নিখোঁজ ব্যক্তির মধ্যে এখনও ১৬৮ জনের খোঁজ মেলেনি।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিজি অশোক কুমার জানিয়েছেন, ‘উদ্ধারকারীরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে ধ্বংসাবশেষ, কাদামাটি সরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেগুলি এত ভারী এবং এতটা বেশি পরিমাণে রয়েছে যে সুড়ঙ্গের ১০০ মিটার পর্যন্ত পরিষ্কার করা গিয়েছে। আর তার পরপরই ফের ওই জায়গাটুকু ভরে গিয়েছে ধ্বংসাবশেষে। বৃহস্পতিবার উদ্ধারকর্মীরা ভেতরে ড্রিল করে সুড়ঙ্গে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার ধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর প্রায় দেড় ফুট বেড়ে যাওয়ার জেরে উদ্ধারকাজ প্রায় আধ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। জলস্তর ফের স্বাভাবিক হয়ে গেলে উদ্ধারকাজ পুনরায় চালু করা হয়। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রবিবারের বিপর্যয়ের জেরে পলি জমে জলের প্রবাহ অবরুদ্ধ করার জন্য এভাবে মাঝেমধ্যে জলস্তর বাড়ছে।
ডিজি অশোক কুমার এ ব্যাপারে জানান, ‘ঠিক কী কারণে জলস্তর বাড়ছে তা পরীক্ষা করে দেখছেন উদ্ধারকারী দলের কয়েকজন সদস্য এবং একদল বিশেষজ্ঞ। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও তাঁরা পরিদর্শনে যান।’ ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি জেলা তেহরি, গড়ওয়াল, চামোলি, উত্তরকাশি, বাগেশ্বরে বিপর্যয়প্রবণ এলাকা সংলগ্ন গ্রামগুলির ৫০টি পরিবারকে পুনর্বাসন দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। তিনি আইআইটি রুরকির সহায়তায় ভূমিকম্প সতর্কতা ব্যবস্থা পরিচালনার লক্ষ্যে ভূমিকম্প শনাক্তকরণ সেন্সর স্থাপনের জন্য ১৫ লক্ষ টাকাও মঞ্জুর করেছেন।
উদ্ধারকাজের অগ্রগতি ও বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার তপোবনে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল বেবী রানী মৌর্য। এদিন সন্ধেয় উত্তরাখণ্ডে এসে মুখ্যমন্ত্রী ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত কোশিয়ারি। উদ্ধারকাজ কতটুকু এগোল তাও জানতে চান তিনি।