উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে মন্ত্রীর ছেলের গাড়ি চাপায় আটজন কৃষকের মৃত্যু হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বরং এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানের সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করতেই তিনি জানালেন, কৃষক হত্যার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তবে এই প্রেক্ষিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকেও বিঁধেছেন তিনি। নির্মলা বলেন, ‘পণ্ডিত মানুষেরা অনেক সময়ই নিজেদের পছন্দ–অপছন্দের মধ্যে বন্দি থাকেন। আসল তথ্য বিশ্লেষণ করেন না। বিজেপি শাসিত রাজ্যের নয় বলে অনেক ক্ষেত্রে একই ধরনের হিংসার ঘটনাকে সামনে আনা হয় না। এই প্রবণতা উদ্বেগের।’
অমর্ত্য সেনকে নিয়ে কী বলেছেন নির্মলা? এখানের এক আলোচনাচক্রে আমন্ত্রিত হয়ে নির্মলা সীতারামন অধ্যাপক লরেন্স সামার্সকে বলেন, ‘অধ্যাপক অমর্ত্য সেন–সহ অনেকেই ভারতে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, পণ্ডিত মানুষেরা নিজেদের পছন্দের বৃত্তে বন্দি। তাঁরা নিজেদের পছন্দ–অপছন্দের ভিত্তিতে মতপ্রকাশ করেন।’ এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু হঠাৎ বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে আক্রমণ করে তিনি চর্চায় চলে এলেন।
তাহলে কী অমর্ত্য সেন বাস্তবের মাটিতে হাঁটেন না? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিলেও নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘দৃষ্টিভঙ্গি এক জিনিস। আর তথ্যভিত্তিক ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। কেউ যদি নির্দিষ্ট ধ্যান–ধারণার ভিত্তিতে মন্তব্য করেন তা হলে তো কিছু বলার নেই। কেউ যদি জেগে থেকে ঘুমের ভান করেন, তা হলে তো তাঁকে জাগানো সম্ভব নয়।’ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা নীতি নিয়ে সমালোচনা করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তার প্রেক্ষিতেই এই সমালোচনা বলে মনে করা হচ্ছে।
লখিমপুর খেরির ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এমন মন্তব্য করা হয়েছে বলে অনেতে মনে করেন। তাই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটলে তা বড় করে দেখানো হয়। আর একই ঘটনা বিজেপি বিরোধী রাজ্যে ঘটলে তা বলা হচ্ছে না। যেহেতু সেখানে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী নেই তাই অনেক ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত ঘটনা প্রচারের আলোয় আসে না। এইসব কথা বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।