সুপর্ণা রায়
পরিবেশজনিত কারণে রাস্তার প্রস্থ কমিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। তা বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু ভারত-চিন সীমান্তের সংযোগকারী রাস্তা হওয়ার কারণ দর্শিয়ে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই রাস্তাগুলির প্রস্থ প্রায় আগের মতোই করল কেন্দ্র। যা চারধাম সড়ক প্রকল্পে প্রভাব ফেলবে।
রাস্তা তৈরির ফলে পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়ে, তা বিবেচনা করে ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রক জানিয়েছিল যে পার্বত্য অঞ্চলে মূল গাড়ি চলাচলের রাস্তা সর্বাধিক ৫.৫ মিটার চওড়া হতে পারে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রের সেই নিয়মবিধি বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলে হাইওয়ে তৈরি নিয়ে কেন্দ্র সেই বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে জানানো হয়েছে, রাস্তায় গাড়ি চলাচলের অংশ থাকবে সাত মিটার।
গত মঙ্গলবার জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'পার্বত্য এলাকায় যে রাস্তাগুলি ভারত-চিন সীমান্তের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তা বা জাতীয সুরক্ষার ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলির গাড়ি চলাচলের রাস্তার প্রস্থ সাত মিটার হতে হবে। একইসঙ্গে দু'দিকে ১.৫ মিটারের জায়গা থাকবে।' নয়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও যোগ করা হয়েছে, 'প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যে বিষয়গুলি উত্থাপন করেছে, তা পর্যালোচনা করে এই বিধি জানানো হয়েছে।'
উত্তরাখণ্ডে কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার এবং চারধাম সড়ক প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিএস খায়রা জানান, নয়া নিয়মের ফলে রাস্তার প্রস্থ ১০ মিটার হয়ে যাবে। সেপ্টেম্বের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে ১০ মিটারের নিয়ম মেনে চলা হচ্ছিল। তিনি জানান, হলফনামা দাখিল করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক শীর্ষ আদালতে রাস্তাগুলির ব্যাখ্যা করেছিল। ২ ডিসেম্বর আবারও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায়, রাস্তার চওড়া ৫.৫ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চিন এবং নেপাল বরাবর সীমান্ত এলাকায় দেশের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির উপর বড়সড় প্রভাব পড়বে।
গত ৫ অক্টোবর এবং ২ নভেম্বরে চিঠি লিখে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির চেয়াপম্যান রবি চোপড়া সুপ্রিম কোর্টে জানান, লাগাতার গাছ কাটছে উত্তরাখণ্ড সরকার। তার ফলে চারধামের রাস্তায় ধস নামছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আবার শীর্ষ আদালতে জানিয়েছে, হৃষিকেশ থেকে মানা, হৃষিকেশ থেকে গঙ্গোত্রী এবং তানাপুকুর থেকে পিথোগড় হাইওয়ে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভারত-চিন সীমান্তের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তা। সেই রাস্তাগুলি চারধাম সড়ক প্রকল্পেরও অন্তর্গত। দুই মন্ত্রকের উদ্বেগ খতিয়ে দেখে উচ্চপর্যায়ের কমিটিকে দু'সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদাল। বিষয়টির আবারও শুনানি হবে নয়া বছরের ১৮ জানুয়ারি।