চাঁদের মাটি ছোঁবে ভারত, এই স্বপ্ন বুকে নিয়ে ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর ‘চন্দ্রযান ৩’ উৎক্ষেপণ হয় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে। আর তার সঙ্গেই ইসরো থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎসবের মেজাজ দেখা যায়। এদিকে, লখনউয়ের কারিধাল পরিবারে আজ যেন হোলি-দিওয়ালি একসঙ্গে উদযাপিত হচ্ছিল! একদিকে দেশের চন্দ্রাভিযানের নতুন অধ্যায়, আর তাতে বাড়তি পাওনা.. ঘরের মেয়ের অবদান! কথা হচ্ছে বিশিষ্ট বিজ্ঞনী ঋতু কারিধাল প্রসঙ্গে। যাঁর পরিচিতি রয়েছে ভারতের ‘রকেট ওম্যান হিসাবে’।
লখনউয়ের ভূমিকন্যা ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব তিনি ইসরোর একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী। তিনি ছিলেন ‘চন্দ্রযান ২’ এর মিশন ডিরেক্টর। এছাড়াও মঙ্গলযান, মার্স অরবিটার মিশনের ডেপুটি অপারেশনাল ডিরেক্টর পদে ছিলেন ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব। তাঁর প্রাপ্ত পুরস্কারগুলির মধ্যে রয়েছে ‘ইসরো ইয়ং সায়ান্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’,'ইসরো টিম অ্যাওয়ার্ড ফর মম ইন ২০১৫', পেয়েছেন ‘এএসআই টিম অ্যাওয়ার্ড’। এছাড়াও বহু সম্মাননা রয়েছে এই মহিলা বিজ্ঞানীর ঝুলিতে।
জানা যায়, লখনউয়ের খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বেড়ে উঠেছেন ঋতু। দুই ভাই ও দুইবোনের সংসারে ঋতুর মধ্যে বারবার ঘুরপাক খেয়েছে পদার্থবিদ্যাকে আলাদা করে আপন করে নেওয়ার চেষ্টা। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক পাশ করেন ঋতু। সেখান থেকেই স্নাতোকোত্তর পাশ করেন তিনি। এরপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়তেই গবেষণার জন্য তাঁর নাম নথিভূক্ত হয়। পরে সেখানে পড়াতেও শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর সেখানে ছয় মাস গবেষণা করার পর তিনি বেঙ্গালুরুতে আইআইএসসিতে ভর্তি হন। পরির্তন হতে থাকে ঋতু কারিধালের কেরিয়ারের দিক। সেখানে এয়রোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তিনি মাস্টার্স করেন। ৪৮ বছর বয়সী ঋতু এখনও মহাকাশ গবেষণা নিয়ে নানান ভাবনায় মগ্ন থাকেন। ইসরো ও নাসার বহু কাট আউট রয়েছে তাঁর সংগ্রহে বলে জানা যায়। পরে ১৯৯৭ সালে ইসরোতে যোগদেন ঋতু। বাকিটা ইতিহাস!
এদিকে, লখনউতে আজ উৎসবের মেজাজ ঋতু কারিধালের পরিবারে। ঘরের মেয়ে দেশের তাবড় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। দেশের ‘রকেট ওম্যান’ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন বোন। ঋতুর ভাই রোহিত কারিধাল বলছেন,'আজ আনন্দের দিন। … বোনের জন্য গর্বিত।' একটা লম্বা সফরের লড়াই পার করে আজ ঋতু কারিধাল দেশের বহু বিজ্ঞানমনস্কের কাছেই এক অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ।