বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > Coromandel Express Accident: স্বামীকে খুঁজছেন পুরুলিয়ার বধূ, মর্গেও নেই ভাই, কাঁদছেন দাদা, গ্রাউন্ড জিরোতে আজও HT

Coromandel Express Accident: স্বামীকে খুঁজছেন পুরুলিয়ার বধূ, মর্গেও নেই ভাই, কাঁদছেন দাদা, গ্রাউন্ড জিরোতে আজও HT

বালাশোরের দুর্ঘটনাস্থল(Photo by Arabinda Mahapatra) (Arabinda Mahapatra)

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনায় পরে তিনটি ট্রেন। ভয়াবহ পরিস্থিতি। তারপর এতগুলো ঘণ্টা কেটে গিয়েছ। একের পর এক দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলিতে পচন ধরতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দুর্ঘটনাস্থল।

দেবব্রত মোহান্তি

সোমবার সকাল

বিহারের চম্পারণ জেলার বাসিন্দা রাজকুমারী পাসোয়ান বালাসোর হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। আশা একটাই যশবন্তপুর হাওড়া এক্সপ্রেসে তাঁর ভাই অমরজিৎ ছিলেন। তাঁকে হয়তো পাওয়া যাবে। সেই বৃহস্পতিবার শেষবার ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারপর আর কথা হয়নি। রাজকুমারী বলেন, কখনও ভাবিনি এভাবে ভাইয়ের খোঁজে এক হাসপাতাল থেকে অপর হাসপাতালে আমায় ঘুরতে হবে।

বাংলার বাঁকুড়ার বাসিন্দা বৈশাখী ধর। তিনি তাঁর স্বামী নিখিল ধরকে খুঁজছেন। তিনি পেশায় সিআরপিএফ জওয়ান। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন নিখিল। স্বামীর জন্য অস্থায়ী মর্গেও খোঁজ করেছেন তিনি। কিন্তু কোথাও নেই। স্বামীর টুপিটা হাতে ধরে ছিলেন বৈশাখী দেবী। তিনি বলেন, তিনদিন ধরে খুঁজছি। কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না স্বামীকে। কোথায় পাব একটু বলবেন?

উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা রফিকুল হক। নিখোঁজ ছোট ভাই অঞ্জরা হককে খুঁজছেন তিনি। অঞ্জরা বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পেটের টানে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে কোথায় যেন সব শেষ হয়ে গেল। সেই শনিবার থেকে হাসপাতাল থেকে মর্গে ছুটে বেড়াচ্ছেন রফিকুল। একের পর এক মৃতের ছবি মিলিয়ে দেখছেন। কিন্তু কোথাও নেই। মাথায় হাত দিয়ে একরাশ হতাশা নিয়ে অপেক্ষায় রফিকুল। রফিকুল বলেন, বালাশোর হাসপাতাল, অস্থায়ী মর্গ সব জায়গায় খুঁজছি। কোথায় পাব ভাইকে? জানি না বেঁচে আছে কি না? জানি না কী হবে…

পুরুলিয়ার বিপ্লব পাল তাঁর ১০ বছরের ভাইপোকে পাচ্ছেন না। যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে মায়ের সঙ্গে ছিল সে। মায়ের খোঁজ মিলেছে। প্রচন্ড জখম। কিন্তু বাচ্চাটি কোথায় গেল?

ওড়িশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা জানিয়েছেন, ওড়িশা সরকার নিজেদের খরচে দেহ তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেবে। ডেথ সার্টিফিকেটও দেওয়া হবে। টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০-৩৪৫০০৬১/ ১৯২৯ নম্বরে ফোন করতে পারেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনায় পরে তিনটি ট্রেন। ভয়াবহ পরিস্থিতি। তারপর এতগুলো ঘণ্টা কেটে গিয়েছ। একের পর এক দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলিতে পচন ধরতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দুর্ঘটনাস্থল। তবে ওই লাইনে ধীরে ধীরে ট্রেন চলতে শুরু করেছে। ফের শুরু হয়েছে লাইফ লাইন। কিন্তু রফিকুল, বৈশাখী ধর, রাজকুমারী পাসোয়ানের জীবনে জমাট বাঁধা অন্ধকার। প্রিয়জনের মুখটাই যে দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা।

 

বন্ধ করুন