মধ্যপ্রদেশের একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ৭ কোটি টাকার ট্যাক্স নোটিশ পেয়েছেন। ৭ কোটির বিপুল অর্থের বোঝা তো আছেই, পরিবারটি হতবাক হয়েছে অন্য কারণে। যার নামে এই পাহাড় প্রমাণ টাকার ট্যাক্স, সেই শিক্ষিকা মারা গিয়েছিলেন আজ থেকে দশ বছর আগে। আর এই নোটিশটি মূল্যায়ন বছর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বর্ষ।
ওই শিক্ষিকার পরিবার শুধু একা নয়, আয়কর বিভাগের সূত্রে জানা গিয়েছে, আদিবাসী অধ্যুষিত বেতুল জেলার ৪৪ জন ব্যক্তি এক কোটি থেকে দশ কোটি টাকার ট্যাক্স সংক্রান্ত নোটিশ পেয়েছে।
ঊষা সোনি পাটখেদা গ্রামের একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। গত ২৬ জুলাই,তাঁর পরিবার আয়কর বিভাগ থেকে ৭.৫৫ কোটি ট্যাক্স বকেয়া পরিশোধের জন্য একটি নোটিশ পেয়েছে।
ঊষা সোনির ছেলে পবন সোনি বলেন, 'দীর্ঘ অসুস্থতার পর আমার মা ২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর মারা যান। ২০১৭-১৮ মূল্যায়ন বছরের জন্য নোটিশটি আমরা পাই। নথিতে 'ন্যাচারাল কস্টিং' নামে একটি কোম্পানির উল্লেখ রয়েছে, যেটি কেনাকাটা কাজে নিযুক্ত ছিল। এবং স্ক্র্যাপ সামগ্রী বিক্রি করত।'
পবন আরও জানান, 'আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমার মায়ের প্যান নম্বর অপব্যবহার করা হয়েছে এবং আমরা এটি সম্পর্কে জানতামও না।'
এই ভুয়ো ট্যাক্সের নোটিশ পেয়ে হতভম্ব আরও এক ব্যক্তি, নিতিন জৈন। নিতিন লোহার রড বিক্রির দোকানে কাজ করে। মাসে সাকুল্যে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা উপার্জন করেন তিনি। ১.২৬ কোটি টাকার ডিমান্ড নোটিশ পাওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই হতবাক হয়ে যান। তিনি আয়কর অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তামিলনাড়ুর কোটাল্লামে তার নামে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, নিতিন এই শহরের নাম কখনও শোনেননি।
নিতিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'তারা আমাকে বলে আমার নামে অ্যাকাউন্টটি ২০১৪-১৫ সালে খোলা হয়েছিল। তারপর থেকে বেশ কয়েকটি বিশাল অঙ্কের লেনদেন হয়েছে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে, যার কারণে আমাকে ১.২৬ কোটি টাকার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। আমি এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেছি।'
ঘটনাগুলির প্রক্রিয়া জানতে চাইলে বেতুলের পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ চৌধুরী বলেন,তারা এখনও পর্যন্ত প্যান অপব্যবহারের দুটি অভিযোগ পেয়েছেন। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, 'দুইজন ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন যে তারা আয়কর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ব্যবসা বা অ্যাকাউন্টের মালিক নয়। তাদের প্যান কার্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। আমরা দ্রুত এর তদন্ত শুরু করেছি। আয়কর বিভাগ থেকে তথ্য পাওয়ার পরে আমরা আরও বিশদ জানতে পারব।'