রোজভ্যালি সংস্থার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে প্রায় ৩০৪ কোটি টাকার সম্পত্তিকে নিজেদের দখলে আনল(পজেশন) কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট(ইডি)। চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমেই এই পদক্ষেপ বলে একটি বিবৃতিতে শুক্রবার জানিয়েছে ইডি। ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’ অনুসারেই এই পদক্ষেপ জানিয়েছে ইডি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে জানা যায় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ত্রিপুরা, অসম, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রোজভ্যালি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির নাম করে প্রচুর সম্পত্তি করা হয়েছিল। মূলত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থকে ঘুরপথে বেআইনীভাবে এই সম্পত্তি কেনার মাধ্যমে ব্যয় করা হয়েছিল।
তদন্ত কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাথেই এই বেআইনীভাবে করা সম্পত্তির ব্য়াপারে খোঁজখবর করা শুরু করে ইডি। মূলত ভুয়ো স্কিম বিক্রির মাধ্যমেই আমজনতার কাছ থেকে টাকা হাতিয়েছিল এই কোম্পানি। অভিযোগ এমনটাই। পাশাপাশি রোজভ্যালির এই সম্পত্তিগুলির সঙ্গে যুক্ত কোম্পানি ও তাদের ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত ও দখলে আনা হচ্ছে।
এজেন্সি সূত্রে খবর, এই সম্পত্তিগুলিকে নিজেদের আয়ত্তে আনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ওড়িশা, ত্রিপুরাতেও বিশেষ অভিযান চালানো হয়। তারই ফলশ্রুতিতে ৪১২টি অস্থাবর সম্পত্তিকে নিজেদের আয়ত্তে আনা হয়েছে। এই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে ৪২৬টি স্থাবর সম্পত্তিতে আনা হয়েছে নিজেদের আয়ত্তে। এগুলির মূল্য প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা। ইডি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে গত কয়েকবছরের তদন্তে দেখা যাচ্ছে রোজভ্য়ালি গ্রুপ অফ কোম্পানিজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা তুলেছে। উচ্চ সুদের হারে টাকা ফেরৎ দেওয়ার নাম করেই এই বেআইনী অর্থলগ্নী সংস্থা আমানতকারীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আদায় করেছে বলে অভিযোগ।এর মধ্যে ১০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। বাকি ফেরৎ দেওয়া হয়নি প্রায় ৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এমনটাই উঠে এসেছে ইডির তদন্তে। তবে ইডির এই গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোম্পানির প্রতিনিধি ও আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা করা সম্ভব হয়নি।