সমস্ত কোভিড নিরাপত্তা বিধি মেনেই পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিল নাডু ও কেরালায় আগামী মে মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওয়াকিবহাল সূত্রে এই খবর জেনেছে হিন্দুস্তান টাইমস।
কোভিড অতিমারী আবহেই ২০২০ সালে আয়োজিত হয়েছে বিহার বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের মোট ৭.৩ কোটি ভোটারের ৫৭% ভোট দিয়েছেন নির্বাচনে। কোভিড সংক্রমণ এড়াতে সেই নির্বাচনে ৩০ হাজারের বেশি ভোট বুথ স্থাপন করেছিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সেই সঙ্গে মেনে চলা হয়েছিল মাস্ক ব্যবহার, স্যানিটাইজেশন ও সামাজিক দূরত্ব নীতি। একই নিয়ম মানা হবে ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও, জানিয়েছে সূত্র।
দেশব্যাপী টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে। তা সত্ত্বেও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে বাঁচতে সমস্ত কোভিড স্বাস্থ্য বিধি মেনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গিয়েছে। কমিশনের যুক্তি, টিকাকরণ প্রক্রিয়াচালু হলেও দেশের সব নাগরিক তার আওতায় পড়ছেন না। এই কারণে কোভিড সংক্রমণের চিন্তা মাথায় নিয়েই নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে ভোট দিতে পারবেন প্রায় ২০ কোটি বৈধ ভোটার। চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে এই প্রথম চালু হতে চলেছে ডিজিটাল ভোটার পরিচয়পত্র। চলতি মাসের শেষ থেকেই তা ভোটারদের কাছে পৌঁছেদেওয়ার কাজশুরু করবে কমিশন। প্রত্যেক নতুন ভোটারকে নথিভুক্তিকরণের সময় দেওয়া হবে ই-এপিক (e-EPIC), যার কিউ আর কোড (QR code) স্ক্যান করার ফলে কমিশনের কাছে ভোটার সংক্রান্ত যাবতীয় সাম্প্রতিক তথ্য জমা পড়বে। এর জেরে গুরুত্ব হারাবে কাগজে ছাপা ভোটার স্লিপ, যদিও প্রথা মেনে এবারও তা সরবরাহ করবে নির্বাচন কমিশন।
এই চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে অনাবাসী ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা সম্ভবত থাকছে না, বলছে সূত্র। যদিও কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে আবেদন করা হয়েছে, ১৯৫১ সালের জনগণ প্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করে বিদেশে বসবাসকারী ভোটারদের ভোটদানের সুযোগ করে দিতে। এখনও পর্যন্ত সেই আবেদনের জবাব দেয়নি মন্ত্রক।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগত পরিবর্তন এনেছে কমিশন। ভোটবুথের সংখ্যাবৃদ্ধি, গণনাকেন্দ্রে টেবিলের সংখ্যা হ্রাস করা এবং জনসভায় বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধি সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৫ জনের মধ্যে। তাছাড়া মনোনয়ন ফর্ম ও প্রার্থীদের জামানত অনলাইনে জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে তামিল নাডু ও পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সরেজমিনে নির্বাচনী প্রস্তুতি খুঁটিয়ে দেখে এসেছেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। কোভিড অতিমারী বহা তবিয়তে বিরাজ করলেও মোটামুটি সদর্থক রিপোর্টই জমা দিয়েছেন কমিশন প্রতিনিধিরা, জানিয়েছে ওয়াকিবহাল সূত্র।