সকালে শেষকৃত্য করলে ‘বড়সড় হিংসার’ সম্ভাবনা ছিল। ‘গোয়েন্দা সূত্রে’ এক লাখের বেশি মানুষের জমায়েতের খবরও মিলেছিল। সেই কারণে গভীর রাতে হাথরাসের তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রবল চাপের মুখে সুপ্রিম কোর্টে একথা জানাল উত্তরপ্রদেশ সরকার।
একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হলফনামা পেশ করে যোগী আদিত্যনাথের সরকারের তরফে দাবি করা হয়, আইন-শৃ্ঙ্খলার যাতে অবনতি না হয়, সেজন্য রাতেই শেষকৃত্য করা হয়েছে। হলফনামায় বলা হয়, 'সকালে বড় মাত্রায় হিংসার ঘটনা এড়াতে যাবতীয় ধর্মীয় রীতি মেনে মৃতের শেষকৃত্যের বিষয়ে অভিভাবকদের বোঝানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। মৃত্যু ও ময়নাতদন্তের পর ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় দেহ পড়েছিল।' তবে যাবতীয় রীতিনীতি মেনেই নাকি শেষকৃত্য হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও তরুণীর পরিবারের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, তাদের আপত্তি সত্ত্বেও শেষকৃত্য করেছে পুলিশ-প্রশাসন।
তারইমধ্যে ষড়যন্ত্রের তাস খেলার চেষ্টা করে যোগী সরকারের তরফে দাবি করা হয়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের বাইরে যেভাবে ‘ধরনা’ চলছিল, তা নিয়ে ‘গোয়েন্দা সূত্রে’ বিভিন্ন খবর পাচ্ছিল হাথরাস জেলা প্রশাসন। হলফনামায় অভিযোগ করা হয়েছে, ‘পুরো বিষয়টির ফায়দা নেওয়া হচ্ছিল এবং তাতে জাতপাত বা সাম্প্রদায়িক রং চড়ানো হচ্ছিল।’ সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দল এবং সংবাদপত্র এবং বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকেও দুষেছে যোগীর প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভয়ানক অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। ‘স্বচ্ছ’ তদন্তকে ভেস্তে দিতে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ সেই কাজ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, হাথরাসের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের সুপারিশ করেছেন যোগী। হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘বিষয়টি যেহেতু দেশের নজরে আছে, তাই কেন্দ্রীয় সংস্থার দ্বারা সেটির তদন্ত করা উচিত।’ তবে শুধু হাথরাসের ঘটনা নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারকে 'কলুষিত' করতে যে 'অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র' করা হয়েছে, তারও সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে।