হাওড়ায় ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়কের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৪৯ লাখ টাকা। সেই মামলায় দিল্লিতে সিদ্ধার্থ মজুমদার নামক এক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে অভিযান চালাতে যান রাজ্যের সিআইডি আধিকারিকরা। আদালতের তল্লাশি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও অবশ্য দিল্লি পুলিশ সিআইডিকে আটকেছে বলে জানা গিয়েছে। সিআইডির চার আধিকারিককে সাউথ ক্যাম্পাস পুলিশ স্টেশনে আটক করে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আটক আধিকারিকদের মধ্যে রয়েছেন এক জন ইনস্পেক্টর, দু’জন এসআই এবং এক জন এএসআই আছেন। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের থেকে উচ্চ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা দিল্লি যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে গতকাল কলকাতায় লালবাজারে বিকানের বিল্ডিংয়ে এক ব্যবসায়ীর দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। মহেন্দ্র আগরওয়াল নামে ওই ব্যবসায়ী বিধাননগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ফেরার তিনি। জানা গিয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে বিপুল টাকা, রূপোর কয়েনসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। দিনভর তল্লাশি চালিয়ে ওই দফতর থেকে পাওয়া গিয়েছে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭০০ টাকা, ২৫০টি রুপোর কয়েন ও বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের পাশবই।
আরও পড়ুন: পরেশের জায়গায় স্নেহাশিস, সুব্রতর শূন্যস্থানে প্রদীপ, দেখে নিন হচ্ছেন কোন মন্ত্রী
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শেয়ার ট্রেডিংয়ের কারবার করেন বলে জানা গিয়েছে। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, মহেন্দ্র আগরওয়াল হাওয়ালার কারবারি। সিআইডির দাবি, ঝাড়খণ্ডের ৩ বিধায়ককে ৪৯ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনিই। সন্ধ্যায় তল্লাশি শেষ করে অফিসটি সিল করে দেন গোয়েন্দারা। এদিকে মহেন্দ্র আগরওয়ালের বিধাননগরের বাড়িতেও তল্লাশি চালান সিআইডির গোয়েন্দারা। তবে সেখানেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার জন্য তার মাধ্যমে কংগ্রেসি বিধায়কদের টাকা দিচ্ছিল বিজেপি।
গত শনিবার হাওড়ার পাঁচলার রানিহাটি মোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেসি বিধায়কের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ৪৯ লক্ষ টাকা। তিন বিধায়ককে পরে গ্রেফতার করে সিআইডি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক কলকাতার এক হোটেলে ৫০ মিনিট ছিলেন। সেখানেই এই টাকার হাতবদল হয়েছে বলে অনুমান করছেন সিআইডি তদন্তকারীরা। মহেন্দ্র আগরওয়ালই সেই টাকা পাঠিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
সিআইডির দাবি তদন্তে উঠে এসেছে, গত মাসের শেষের দিকে ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার জন্য তৎপর হন ২ কংগ্রেস বিধায়ক। গত ২০ জুন গুয়াহাটি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা করেন ২ বিধায়ক রাজেশ কচ্ছপ, ইরফান আনসারি। এর পর রাঁচি ফিরে যান তাঁরা। গত শনিবার ফের গুয়াহাটি যান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন আরও ১ বিধায়ক। এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ফের বৈঠক হয় হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে। বৈঠকে তারা জানান, একাধিক কংগ্রেসি ও জেএমএম বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু দল ভাঙাতে কিছু টাকার প্রয়োজন। তখন মধ্যস্থতাকারী জানান টাকা পাওয়া যাবে কলকাতায়। সেই মতো কলকাতায় আসেন এই তিন বিধায়ক।