চলতি বছর মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একাধিক কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। তাদের এই আগ্রাসী আর্থিক নীতির কারণে ডলার আরও শক্তিশালী হয়েছে। এদিকে ভারতীয় মুদ্রায় সেই প্রেক্ষিতে ১১.৩% পতন হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, টাকা ২০২২ সালে এশিয়ার সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করা মুদ্রাগুলির মধ্যে অন্যতম। করোনা থেকে প্রত্যাবর্তনে বছরে যা কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল। ২০১৩ সালের পর এটিই কোনও একটি নির্দিষ্ট বছরে সবচেয়ে বড় পতন।
২০২১ সালের শেষের দিকে ১ মার্কিন ডলার = ৭৪.৩৩ টাকা ছিল। বর্তমানে সেখান থেকে নেমে ৮২.৭২ টাকায় এসে গিয়েছে ভারতীয় মুদ্রা। ডলার সূচকে ২০১৫ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় বার্ষিক উত্থান হয়েছে। আরও পড়ুন: Best Share in the World: এক বছরে ১,৬০০% রিটার্ন দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার এই শেয়ার!
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমেই বেড়েছে। উন্নত দেশগুলির বাজার চরম মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে। নিজের দেশে মন্দার অবস্থা দেখে ভারত থেকে বিনিয়োগের টাকা তুলে নিয়েছে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী। সমগ্র পরিস্থিতির শিকার হয়েছে রুপি।
ICICI সিকিউরিটিজের ডেরিভেটিভ রিসার্চের প্রধান রাজ দীপক সিং বলেন, 'যদি উন্নত দেশগুলিতে মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেক্ষেত্রে ফেড(মার্কিন) প্রত্যাশিত সময়ের চেয়েও বেশিদিন ধরে এই সুদের চড়া হার বজায় রাখতে পারে। আর এমন পরিস্থিতিতে ভারতের রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটিই আপাতত রুপির প্রধান ঝুঁকি।'
বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এবং বিশ্লেষকের ধারণা, প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতীয় মুদ্রা ডলারের নিরিখে ৮১.৫০-৮৩.৫০ রেঞ্জের মধ্যে থাকবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ইক্যুইটি বিনিয়োগের প্রবণতার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে।
ফলে ২০২৩ সালের সূচনার প্রাক্কালে কোনও কিছুই নিশ্চিত নয় বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন বছরে কঠোর অর্থনৈতিক নীতি, বড় দেশগুলিতে আর্থিক মন্দা, ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত ইত্যাদি জারি থাকবে। শেয়ার বাজার কোন দিয়ে এগোবে, তাও বোঝা কঠিন। আর ঠিক সেই কারণেই ভারতীয় মুদ্রার অবস্থান নিয়েও সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। আরও পড়ুন: ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার বেচতে চলেছে Dabur-র বর্মন পরিবার! আপনি কিনবেন?
রুপির মূল্য বৃদ্ধিও পায়, সেক্ষেত্রেও এটি এশিয়ার অন্য দেশগুলির মুদ্রার তুলনায় পিছিয়ে থাকতে পারে। বরং দক্ষিণ কোরিয়ার ওন এবং থাই বাটের মূল্য আগামী বছর সবচেয়ে বেশি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।