ডোকরার গয়না বা মূর্তি বা ঘর জিনিসের সঙ্গে ওয়াকিবহাল নন এমন মানুষ বড় কমই আছেন। তবে জানেন কি এর উৎস কোথায়? এটা মূলত বাংলার বাঁকুড়া এবং ওড়িশা সহ মধ্য প্রদেশে যেখানে ধাতু পাওয়া যায় যেখানে পাওয়া যায় বা বানানো হয়। এটা একটা বহু পুরনো শিল্পকলা। এবার ওড়িশার এসসি এবং এসটি বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন এই রাজ্যের ঢেঙ্কানাল জেলার একটি গ্রামে এই ৫০০০ বছর পুরনো শিল্পকলার ডোকরা আর্ট হাউজিং এর প্রথম যাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
সাদেইবেরেনি নবাজিবানপুর শিল্পে বর্তমানে ৫০০ ডোকরা শিল্পের কাজ চলছে। রূপা রোশান সাউ, ওড়িশার এসটি এসসি বিভাগের সচিব জানিয়েছেন এই যাদুঘর এবং একই সঙ্গে ঢেঙ্কানাল গ্রাম অক্টোবরের আগেই প্রস্তুত হয়ে যাবে। এই গ্রামে সিতুলা উপজাতির ৬০ পরিবার বসবাস করেন। এঁরাই মূলত এই ডোকরা শিল্প নিয়ে কাজ করেন।
তিনি আরও জানান, 'এই গ্রামের এবং যাদুঘরের ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখানে অন্তত ৯ জন জাতীয় পুরস্কার প্রাপক শিল্পীর কাজ প্রদর্শিত হবে। বর্তমানে আমরা প্রত্নবস্তুগুলির সোর্সিং করছি।' এই সাদেইবেরেনি এবং নবাজিবানপুর গ্রামে যে ডোকরা শিল্পীরা থাকেন তাঁরা মূলত বিভিন্ন দেব দেবী এবং পৌরাণিক জন্তুদের মূর্তি বানান। অন্যদিকে ছত্তিশগড়ের শিল্পীরা বানান মানুষের মূর্তি।
এই ডোকরার জিনিস বানানোর ক্ষেত্রে মোম দিয়ে জোড়া লাগানোর পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতেই মহেঞ্জোদারো থেকে উদ্দার হওয়া সেই নৃত্যশিল্পীর মূর্তি বানানো হয়েছিল।
তবে এই ডোকরার জন্য নির্মিত যাদুঘরে কেবল ডোকরা শিল্পী নয়, একে সঙ্গে খড় দিয়ে নির্মিত কারুশিল্প এবং তাঁর শিল্পের প্রদর্শন করা হবে।
আরও পড়ুন: 'কী মারাত্মক এক্সপ্রেশন!', ইউনিফর্ম পরেই 'প্রাণ ভরিয়ে'-তে নাচ, পোস্ট হতেই ফেসবুকে ভাইরাল এই কিশোর
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি বন্ধুদের মজলিস জমল গীতা দত্তের গানে, ফেসবুকে পোস্ট হতে নিমেষেই ভাইরাল, দেখুন ভিডিয়ো
ডোকরার মূর্তি কীভাবে তৈরি হয়?
এই মূর্তি বানানোর জন্য গোবর আর লাল মাটি লাগে প্রাথমিক ভাবে। তারপর সেটা মিশিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো হয়। সেগুলো তারপর রোদে শুকিয়ে আঠা লাগানো হয় তাতে। এরপর বিজ ওয়াক্স থেকে বানানো ব্ল্যাক ওয়াক্স স্ট্র্যান্ড লাগানো হয়। তারপর মাটি দেওয়া হয় এই মূর্তিতে। এরপর উপর থেকে গলানো পিতল ঢেলে দেওয়া হয়।
এই যাদুঘর নিয়ে স্থানীয়রা আশাবাদী। তাঁদের দুরবস্থা এই যাদুঘর দূর করবে বলেই তাঁদের বিশ্বাস। ডোকরা শিল্পী অভি মাঝি বলেন, 'কোভিড মহামারীর পর আমাদের শিল্পের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি এই যাদুঘর থেকে আমাদের সবার উপকার হবে।'